ভাল্লুকের পিত্তই সারিয়ে তুলবে কোভিড-১৯, আজব ‘চিকিৎসা’য় সায় চিন সরকারের

না, কোভিড-১৯এর এখনও অবধি কোনো চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি। অন্তত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয়েছে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তিদের রাখা হচ্ছে আইসোলেশনে। কিছু উপসর্গ ধরে চলছে চিকিৎসা। পৃথিবীর সমস্ত দেশেই অবস্থা এরকম। থুরি, সমস্ত দেশ নয়। চিনের ভেষজ চিকিৎসকরা দাবি করছেন, তাঁরা এই রোগ সরিয়ে তুলতে পারেন। তৈরি হয়ে গিয়েছে ওষুধও। এমনকি সেই ওষুধের জন্য সরকারি অনুমতিও পাওয়া গিয়েছে। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

আরও পড়ুন
করোনার টেস্ট কিট তৈরি করল ভারত নিজেই, মাত্র ৬ সপ্তাহের প্রচেষ্টায় সাফল্য

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরই বিতর্ক শুরু হয়েছিল জীবিত প্রাণীর ব্যবসা নিয়ে। ফলে সরকার আইন করে সেই ব্যবসা বন্ধ করে দেয়। সেই ঘটনার পর মাস পেরোতে না পেরোতেই আবার শুরু হয় বিতর্ক। করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় হাতুড়ে ডাক্তাররা নাকি ব্যবহার করছেন তান-রি-ক্যুইন ইনজেকশন। আর সরকার তাতে ছাড়পত্রও দিয়েছে।

আরও পড়ুন
সেরে উঠেও রেহাই নেই চিনে, ১৪% মানুষ দ্বিতীয়বার আক্রান্ত করোনায়

কিন্তু কী এই তান-রি-ক্যুইন ইনজেকশন? এর মূল উপাদান হল বিভিন্ন প্রজাতির ভাল্লুকের পিত্ত। ভাল্লুকের শরীরের ভিতর ক্যাথারচার বসিয়ে সংগ্রহ করা হয় পিত্ত। তারপর সেটা থেকেই এই ওষুধ বানানো হয়। শ্বাসকষ্টের চিকিৎসায় এই ওষুধ ব্যবহৃত হয়ে আসছে ১ হাজার বছরের বেশি সময় ধরে। কিন্তু তা কি আদৌ করোনা ভাইরাসকে রুখতে পারে? এমন প্রশ্ন শুনে তাজ্জব চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। ভাল্লুকের পিত্তে থাকা উর্সোডায়োল নামক যৌগ মৃত কোষ বাঁচিয়ে রাখতে কার্যকর, একথা ঠিক। কিন্তু করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় এই ওষুধ! এমনটা ভাবতেও পারছেন না তাঁরা।

আরও পড়ুন
হাসপাতালে স্থানাভাব, মেঝেতে শুয়ে করোনা-আক্রান্তরা – ভয়াবহ দৃশ্য স্পেনে

এমন চিকিৎসাপদ্ধতিকে ঘিরে তাই বিতর্ক উঠছে স্বাভাবিকভাবেই। বিশেষ করে, তাতে যখন সরকার স্বীকৃতি দিয়েছে। এভাবে কি আসলে বন্য প্রাণীর বেআইনি ব্যবসাকেই স্বীকৃতি দিয়ে বসছে না সরকার? উঠছে সেই প্রশ্নও। এমনটাও দাবি করা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর ভিয়েতনাম, লাওস প্রভৃতি দেশ থেকে ভাল্লুক পাচারের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। এমনকি অনেক হাতুড়ে ডাক্তার আবার গণ্ডার বা মোষের শিং দিয়েও চিকিৎসা করছেন বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন
বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, চিন ইতালিকে ছাপিয়ে শীর্ষে আমেরিকা

গণ্ডার হত্যার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এখনও চলছে চোরাশিকার। আর এর মধ্যে করোনা মহামারী যেন সেইসব বেআইনি ব্যবসাকেই স্বীকৃতি দিয়ে বসছে। তবে তার জন্য যেমন সাধারণ মানুষের অশিক্ষা দায়ী, আবার সরকারও কি দায় এড়িয়ে যেতে পারে? সমস্ত জেনে বুঝেও এধরনের চিকিৎসায় অনুমতি দেওয়ার অর্থ কি? উঠছে সেই প্রশ্নও…