দিনে সাড়ে ২৩ ঘণ্টা, বছরে ৩৭২ দিন; প্রাগৈতিহাসিক পৃথিবী ছিল এমনই

এক দিনে কত ঘণ্টা? কত দিনে এক বছর হয়? এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে আপনারা নিশ্চয়ই প্রশ্নকর্তাকে পাগলই ভাববেন। ছোটো বাচ্চারাও এর উত্তর সহজেই দিয়ে দেবে। কিন্তু আমরা যা জানি, সেটাই কি আদি অনন্তকাল ধরে চলে আসছে? হ্যাঁ, এখানেই প্রশ্নচিহ্ন রেখে দিয়েছে সাম্প্রতিক একটি গবেষণা। যেখানে বলা হয়েছে, একটা সময় দিনের হিসেব ২৪ ঘণ্টায় নয়, সাড়ে ২৩ ঘণ্টায় হত। আর বছরের মোট দিন? সেটাও ৩৬৫ নয়, ৩৭২!

আরও পড়ুন
২৯ নয়, পৃথিবীর দুটি দেশে ফেব্রুয়ারির হিসেব হয়েছিল ৩০ দিনেই

অবাক লাগছে? সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিজ্ঞানীদের গবেষণা সেই অদ্ভুত ব্যাপারটির দিকেই ইঙ্গিত করেছেন। আমরা জানি, ৩৬৫ দিনে (লিপ ইয়ারে ৩৬৬ দিন) পৃথিবী সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করে আসে। আর নিজের অক্ষের ওপর এক পাক খেতে সময় লাগে ২৪ ঘণ্টা। এই দুটো হিসেব একই থাকে আমাদের কাছে। কারণ, পৃথিবীর নিজের কক্ষপথে চলার গতি পরিবর্তিত হয় না। কিন্তু প্রাগৈতিহাসিক সময় ঠিক এটাই হয়েছিল। পৃথিবীর ঘূর্ণনের হারের হেরফেরের কারণে ৩৬৫ দিন বেড়ে হয়ে যায় ৩৭২ দিন। আর ২৪ ঘণ্টা কমে হয়ে যায় ২৩.৫ ঘণ্টা। পরে সেসব ঠিক হয়ে যায়। এর জন্য বিজ্ঞানীরা দায়ী করেছেন চাঁদকে। আমাদের এই উপগ্রহটি না থাকলে শুধু যে জোয়ার-ভাঁটা হত না, তা নয়। এই দিনের সংখ্যাও ঠিকঠাক জায়গায় আসত না।

আরও পড়ুন
১১ মিনিটের ‘সমস্যা’য় জন্ম ২৯ ফেব্রুয়ারির, মেয়েরা ছেলেদের প্রেমপ্রস্তাব দিতেন এই দিনে

কিন্তু এতসব জানার উৎসটা কী? সেটাও কম আশ্চর্যের নয়। আনুমানিক ৭০ মিলিয়ন বছর আগের শেল থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। এই শেলের ফসিলটির লেজার স্যামপ্লিং ও অন্যান্য জটিল পরীক্ষা করেই নানা স্তরে সাজানো জয়েছে সেই সময়ের চিত্র। তা থেকেই উঠে আসছে ৭০ মিলিয়ন বছর আগের দিনের সামগ্রিক চিত্র। পরিবেশ, উষ্ণতা থেকে শুরু করে সব কিছু বিজ্ঞানীরা খুঁজে খুঁজে বের করেছেন। তাঁদের মতে, ভূতত্ত্বের গবেষণার ইতিহাসে এমন জিনিস হয়নি! স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজিত সবাই। তার ওপর এমন সব অভিনব তথ্য। গবেষণা যে এখনও শেষ করতে রাজি নন তাঁরা, সেটা বুঝিয়েই দিয়েছেন। হয়তো আরও কিছু চমক অপেক্ষা করছে সবার জন্য।