ভারতের পড়ুয়াদের মধ্যে অধিকাংশই এখন বেছে নেয় ইঞ্জিনিয়ারিংকে। ছেলেদের পাশাপাশি সেখানে রয়েছে মেয়েরাও। কিন্তু ভারতে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শুরুর দিকে এতটা কি সহজ ছিল? ছেলেরা আসলেও, মেয়েরা এই বিভাগে আসতই না। পরিস্থিতি বদলে গেল ১৯৪৪-এ। ভারত পেল তাঁর প্রথম মহিলা ইঞ্জিনিয়ারকে। একজন নয়, তিনজন। তাঁদের মধ্যেই ছিলেন পি কে থ্রেসিয়া। ইতিহাস যাকে দেশের প্রথম মহিলা চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চেনে।
আরও পড়ুন
শুধু ভারতবর্ষ নয়, ইংল্যান্ডেরও প্রথম মহিলা আইনজীবী ছিলেন তিনি
১৯২৪ সালে কেরালায় এক খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নেন থ্রেসিয়া। বাবা ছিলেন কৃষিবিদ। ছোট থেকেই বাড়িতে ছিল শিক্ষার পরিবেশ। একসময় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রতি আকর্ষণ জন্মায় থ্রেসিয়ার। এখনকার মতো তখন এত প্রচলিত বিষয় ছিল না এটি। বিশেষ করে, মেয়েদের জন্য। কিন্তু থ্রেসিয়া ভয় পেলেন না। তাঁর প্রধান ভরসা হয়ে দাঁড়ালেন বাবা, কাক্কাপ্পান। মেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুক, এমন স্বপ্ন দেখেছেন তিনিও। কিন্তু যবে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করলেন, ততদিনে বাবা তাঁদের ছেড়ে চলে গেছেন।
আরও পড়ুন
স্বাধীনতার আগেই বিজ্ঞানে দেশের প্রথম মহিলা ডক্টরেট হয়েছিলেন এই বাঙালি রসায়নবিদ
১৯৪৪ সালে লেলাম্মা জর্জ এবং লালিথা’র সঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন তিনি। এই তিনজনই ভারতের প্রথম মহিলা গ্র্যাজুয়েট ইঞ্জিনিয়ার। ইতিহাসটা তখনই লেখা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে সেটা আরও বিস্তৃত হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পাশ করা থ্রেসিয়া পিডব্লিউডি-এর অধীনে কাজ করেন। যত দিন যায়, তাঁর নিষ্ঠা ও দক্ষতার জোরে পদোন্নতি হতে থাকে। একসময় তিনি হয়ে যান পিডব্লিউডি-এর প্রথম মহিলা চিফ ইঞ্জিনিয়ার। শুধু ভারতের নয়, গোটা এশিয়ার প্রথম মহিলা চিফ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন
বিশ্বযুদ্ধের বাতিল যন্ত্রাংশ দিয়ে গবেষণা, বাঙালি পেয়েছিল পদার্থবিদ্যায় প্রথম মহিলা ডক্টরেটকে
৩৫টার ওপর নতুন ব্রিজ বানানো, হাসপাতালের বিল্ডিং বানানো, কেরালায় রাবারাইজড বিটুমেনের রাস্তা তৈরি, দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা কাজ করে গেছেন পি কে থ্রেসিয়া। শুধুমাত্র কাজকেই ভালবেসে গেছেন তিনি, বিয়েও করেননি সে-জন্য। এতটা নিষ্ঠা ছিল তাঁর। আর তাঁর এই কাজের জন্যই রয়ে গেছেন ইতিহাসে।