সমুদ্রের নিচে লুকিয়ে মারণ রোগ, স্পঞ্জের অসুখে বিধ্বস্ত মানুষও

স্কুলের জীবন বিজ্ঞান বই, বা টিভির মাধ্যমে স্পঞ্জের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ হয়েছে। অনেকে এমনও আছেন, যারা স্পঞ্জ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু সম্প্রতি পরিস্থিতি বদলেছে। এই স্পঞ্জের সংসারে থাবা বসিয়েছে একটি রোগ, ‘ব্লাইট’। আর এর আক্রমণেই দিশাহারা এই মানুষগুলো। একপ্রকার বাধ্য হয়েই সমুদ্রের আরও গভীরে গিয়ে চাষ করতে হচ্ছে। স্পঞ্জের সঙ্গে এদের জীবনও ঝুঁকির মুখে পড়ছে।

তিউনিসিয়ার সমুদ্রে প্রাচীন সময় থেকেই স্পঞ্জের চাষ করা হয়। সেখানকার বহু মানুষ এই জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। মোটামুটি খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতক থেকে এটি চালু হয়। ঠিকঠাকই চলছিল, কিন্তু এই বছরের গোড়া থেকেই হানা দিয়েছে ‘ব্লাইট’। এই রোগটি একবার দেখা দিলে মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ে। ৮০-এর দশকে একবার এই রোগ দেখা যায়। দীর্ঘ সময় শান্ত থাকার পর, আবারও এখন মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে এই ব্লাইট। যার জন্য স্পঞ্জের ধ্বংস তো হচ্ছেই। সেই সঙ্গে প্রবল অসুবিধায় পড়েছেন তিউনিসিয়ার এই মৎস্যজীবীরা।

সাধারণত সমুদ্রের যে গভীরতায় গিয়ে স্পঞ্জ চাষ করা হয়, তার থেকেও অনেক বেশি গভীরে গিয়ে চাষ করতে হচ্ছে এখন। এদিকে সমুদ্রের অত নিচে যাওয়ার প্রয়োজনীয় সুরক্ষা বা সরঞ্জামও নেই এই মানুষগুলোর কাছে। যার ফলে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েও এই কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। তা না হলে, বন্ধ হয়ে যাবে রোজগার। এই কাজ করতে গিয়ে অনেকে মারাও গেছেন, গুরুতর আহতও হয়েছেন। এদিকে স্পঞ্জের ক্ষতি হচ্ছে বলে ব্যবসাতেও প্রভাব পড়ছে।

অনেকের মতে, ক্রমাগত বেড়ে চলা পরিবেশ দূষণের জন্য এই রোগটি আবার শুরু হয়েছে। কেন এমন ঘটনা, সেটা এখনও পরীক্ষা করা বাকি। কিন্তু পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়াও যাচ্ছে না। ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সমুদ্রের জলজীবন অনেক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই ঘটনা সেটারই নতুন ভাগ বলে মনে করছেন অনেকে।