করোনা রুখতে নয়া মাস্ক, চমকপ্রদ আবিষ্কার মেমারির ছাত্রীর

একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী দিগন্তিকা বসু। বর্ধমান জেলার মেমরি শহরের এই কিশোরীর আবিষ্কারই অবাক করছে সমস্ত বিজ্ঞানীদের। নোবেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছেন অনেকেই। এর মধ্যেই দিগন্তিকার আবিষ্কৃত মাস্ক সাড়া ফেলে দিয়েছে। শুধুই করোনা নয়, যেকোনো ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে কাজে দেবে এই মাস্ক। তেমনটাই দাবি দিগন্তিকার। মাস্কের কার্যপ্রণালী খতিয়ে দেখছে ন্যাশনাল ইনোভেশন ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়ার বিজ্ঞানীরাও।

আরও পড়ুন
করোনা-আক্রান্তদের খাবার ও ওষুধ দেবে রোবট, চমক গুয়াহাটির পড়ুয়াদের

সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রতিযোগিতার নাম 'কোভিড-১৯ সলিউশন চ্যালেঞ্জ'। সেখানেই এই মাস্কটি নথিভুক্ত করে মেমরি বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যামন্দিরের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিগন্তিকা। তার আবিষ্কারটির পোশাকি নাম, 'পিওর এয়ার প্রোভাইডার অ্যান্ড ভাইরাস ডেস্ট্রয়ার মাস্ক'। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ভাইরোলজিস্টের প্রশংসা পেয়েছে এই মাস্ক। তাই স্বীকৃতি শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

আরও পড়ুন
বাতাসেই করোনা মারবে এই মেশিন, চমকপ্রদ আবিষ্কার বাঙালি গবেষকের

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পড়ার কথা বলা হচ্ছে অনেকদিন। কিন্তু অতি সূক্ষ্ম এই ভাইরাস সাধারণ মাস্কে আটকায় না। আবার ভুল মাস্কের ব্যবহারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কথাও শোনা গিয়েছে। এর মধ্যেই মাত্র ২০০ টাকা খরচে দিগন্তিকা তৈরি করে ফেলল বিশেষভাবে কার্যকরী এই মাস্ক। তাতে আছে দুটি ভালভ এবং দুটি প্রকোষ্ঠ। ভালভের মধ্যে আটকে যাবে যাবতীয় ধূলিকণা এবং দূষক পদার্থ। আর কিছু সূক্ষ্ম ভাইরাস, যা প্রকোষ্ঠে এসে জমা হবে; বিশেষ প্রযুক্তিতে নষ্ট করে ফেলা হবে তার প্রোটিনের স্তর। ফলে নিশ্বাসের মাধ্যমে যে বাতাস মানুষের ফুসফুসে পৌঁছবে তা সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। এমনকি সংক্রমিত ব্যক্তির ফুসফুস থেকে যে বাতাস বেরোবে, তাও প্রকৃতিতে মেশার আগেই ভাইরাসমুক্ত করে ফেলা যাবে। ইতিমধ্যে ওড়িশার বীর সুন্দর সাই ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির আইডিয়া ইনোভেশন শাখা তার এই আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দিয়েছে। কেন্দ্রের তরফ থেকে স্বীকৃতি পেতে এখনও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা বাকি।

আরও পড়ুন
দাম মাত্র ২৫০, করোনার টেস্টকিট তৈরি করে বাজিমাত বাঙালির

এর আগেও বিভিন্ন আবিষ্কারে বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি কেড়েছে দিগন্তিকা। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের হাতে পুরস্কৃত হয়েছে একাধিকবার। পুরস্কার নিয়েছে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকেও। এবার সেই ক্ষুদে বিজ্ঞানীর আবিষ্কার পথ দেখাচ্ছে মহামারী করোনার মোকাবিলাতেও। এমন অল্প বয়সে তার এই আবিষ্কার প্রশংসার দাবি তো রাখেই। এখন অপেক্ষা শুধু সরকারের স্বীকৃতি আর এই আবিষ্কারের ব্যবহারিক প্রয়োগের।