চলে গেলেন ‘ডাকওয়ার্থ লুইস’ পদ্ধতির অন্যতম আবিষ্কারক টনি লুইস

স্টেডিয়ামের মধ্যে চলছে টানটান উত্তেজনায় ভরা ক্রিকেট ম্যাচ, আর গ্যালারিতে ভিড় করে দাঁড়িয়ে দর্শক। কিন্তু এর মধ্যেই দেখতে দেখতে আকাশ ভেঙে নামল বৃষ্টি। এমনটা তো হামেশাই হয়ে থাকে। তখন কী করা যাবে? কমিয়ে আনা হয় একটি ইনিংসের ওভারের সংখ্যা, আর গাণিতিক বিশ্লেষণে বেছে নেওয়া হয় বিজয়ী দলকে। এই পদ্ধতির নাম 'ডিএলএস মেথড'। নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দুই ম্যাথামেটিশিয়ানের অন্যতম, টনি লুইস মারা গেলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

আরও পড়ুন
কোনো ক্রিকেটার নন, সেবার মাঠকর্মীরাই পেয়েছিলেন ‘ম্যান অব দ্য মাচ’ পুরস্কার

গতকাল, ১ এপ্রিল তাঁর মৃত্যুর সংবাদ জানা যায়। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ক্রিকেট দুনিয়া। শোকজ্ঞাপন করেছেন ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডও। ক্রিকেটের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক যদিও নিছক দর্শকদের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সমস্তটাই বদলে যায় ১৯৯২ সালের সিডনি ওয়ার্ল্ডকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচের সূত্রে। খারাপ আবহাওয়ার জন্য ম্যাচ ভেস্তে যায়। সেইসঙ্গে সমস্যা ছিল পুরনো গাণিতিক পদ্ধতিতেও। ফলে যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেনি সাউথ আফ্রিকা। টনি তখন খুঁজতে শুরু করেন নতুন ফর্মুলা। আর এভাবেই ১৯৯৭ সালে ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থের সহযোগিতায় তৈরি করে ফেলেন নতুন পদ্ধতি। ১৯৯৯ সাল থেকে সেই পদ্ধতিই মেনে চলছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল। এই আবিষ্কারের জন্য সম্মান পেয়েছেন নানা স্তর থেকে। ২০১০ সালে ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে পান 'এমবিই সম্মান'।

আরও পড়ুন
সঙ্গীত জগতেও আঘাত করোনার, প্রয়াত আফ্রিকান স্যাক্সোফোন শিল্পী দিবাংগো

'ডিএলএস মেথড'এর নানা সীমাবদ্ধতার কথাও অবশ্য আলোচনা করা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এর থেকে নিখুঁত কোনো পদ্ধতির সন্ধান দিতে পারেননি কেউই। আর তার থেকেও বড়ো কথা, বিজ্ঞানের জগতের একজন মানুষের সঙ্গে ক্রিকেটের আত্মিক যোগ। নিছক ভালোবাসার তাগিদেই তাঁর দীর্ঘ গবেষণা। সেই প্রচেষ্টাই তাঁকে ক্রিকেটের জগতে স্মরণীয় করে রাখবে চিরকাল। টনি লুইসের আকস্মিক মৃত্যুতে তাই ক্রিকেট জগতের পেশাদার মানুষরা তো বটেই, শোকস্তব্ধ সাধারণ দর্শকরাও। তবে তাঁর আবিষ্কৃত ফর্মুলা এখনও বেঁচে থাকবে। আগামী বহু ম্যাচের ফলাফল নির্ণয়ে বিচারকদের পথ দেখাবে। আর এর মধ্যেই থেকে যাবেন টনি লুইস।