সঙ্গীত জগতেও আঘাত করোনার, প্রয়াত আফ্রিকান স্যাক্সোফোন শিল্পী দিবাংগো

সংকট নেমেছে পৃথিবীর সর্বত্র। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা কিছুতেই ২১ হাজারের কম নয়। হ্যাঁ, করোনা ভাইরাসের আক্রমণেই মারা গিয়েছেন এতজন। আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। আর সম্প্রতি সেই তালিকায় যোগ হল সঙ্গীত জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের নাম। মানু দিবাংগো। সংক্রমণ ধরা পড়েছিল এই মাসের শুরুতেই। আর ভাইরাসটির নাম যেহেতু করোনা, অতএব মৃত্যু যে বেশি দেরি নেই সেকথা জানতেন সবাই। এর মধ্যেই গত মঙ্গলবার জানা গেল অন্তিম সংবাদ। ৮৬ বছর বয়সী আফ্রিকান স্যাক্সোফোন শিল্পী পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেলেন।

আরও পড়ুন
করোনা ছাড়ল না বাকিংহামকেও, আক্রান্ত প্রিন্স চার্লস

জন্মেছিলেন আফ্রিকার ক্যামেরুনে। সেখান থেকে পাড়ি দেন ফ্রান্স। সেটা প্রায় সত্তর বছর আগের কথা। ফ্রান্সে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় সঙ্গীতশিক্ষা। ৬০-এর দশক থেকে সেটাকেই পেশা বানিয়ে নিয়েছিলেন। তৈরি করেছিলেন নিজস্ব ব্যান্ড। জনপ্রিয় জ্যাজ ঘরানার সঙ্গে মিশিয়ে নিয়েছিলেন আফ্রিকার চিরাচরিত সুর। তাঁর সুরের মূর্ছনায় মেতে উঠেছিল সারা ইউরোপ। এমনকি ইউরোপের সীমানা ছাড়িয়ে যেতেও বেশি সময় লাগেনি।
সালটা ১৯৭২। প্রকাশ পেল দিবাংগোর অন্যতম বিখ্যাত সৃষ্টি 'সোল মাকোসা'। বলা যায়, এই গানটিই তাঁকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি এনে দিয়েছিল। গানের সুর অনুপ্রাণিত করেছে পরবর্তী বহু শিল্পীকেও। এমনকি মাইকেল জ্যাকসন এই গানের অনুকরণ করেছেন বলে বিতর্ক শুরু হয় একসময়। পরবর্তীকালে অবশ্য দুজনের সম্পর্ক বেশ বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। ১৯৯২ সালে ওয়াকিফরা অ্যালবামে তিনি কাজ করলেন ব্রিটেনের দুই প্রবাদপ্রতিম গায়ক পিটার গ্যাব্রিয়েল এবং সিনেদ ও'কন্নরের সঙ্গে। তারপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সম্মানও পেয়েছেন প্রচুর। পেয়েছেন ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান লিজিয়ন ডি'অনার।

আরও পড়ুন
তামাক পাতা থেকেই আবিষ্কার ‘ভাইরাস’ – ১৩০ বছর আগে দুই বিজ্ঞানীর কাণ্ডকারখানা

শুধু স্যাক্সোফোনই নয়, সারাজীবনে অনেক বাদ্যযন্ত্রই বাজিয়েছেন তিনি। তবে স্যাক্সোফোনের সঙ্গেই তৈরি হয়েছিল তাঁর সখ্য। বলতেন, এর মধ্যেই যেন প্রাণ খুঁজে পান তিনি। আজ আর দিবাংগো নেই। তাঁর সুরের ছোঁয়া পাবে না কোনো রঙ্গালয়। শোকস্তব্ধ সারা পৃথিবী। তাঁর প্রিয় স্যাক্সোফোনও কি দুঃখ করছে? নাকি তার মধ্যেই এখনও দিবাংগোর 'প্রাণ' জীবিত আছে?