নালা থেকে উদ্ধার শতাব্দীপ্রাচীন কামান, কলকাতার অজানা ইতিহাস পড়ে ছিল পথেই

দিনেদুপুরে রাস্তায় পড়ে আছে দুটি কামান। রাস্তা না বলে বলা ভালো নালায়। অথচ আশেপাশের বাসিন্দাদের হেলদোল নেই কোনো। জোড়াবাগানের জোড়াকামানের গল্পটা ঠিক এইরকমই ছিল। পরবর্তীকালে অবশ্য উদ্ধার করা হয় সেগুলো। জোড়াবাগান অঞ্চলেই সযত্নে রাখা হয়েছে সেই কামানদুটো।

কিন্তু কামানদুটির ইতিহাস কী? গবেষকদের মতে, অন্তত দেড়শো বা তারও বেশি পুরনো এই দুটি কামান। একটা সময় ব্রিটিশ নৌবাহিনীতে ব্যবহৃত হত এই কামানগুলি। অবশ্য জোড়াবাগানে যে দুটি কামান পাওয়া গেছে, সেগুলি একই প্রকৃতির নয়। একটি কামান হল চার পাউন্ডার আর্মস্ট্রং-ফ্রেডেরিক কামান, যেটি অপেক্ষাকৃত বেশি প্রাচীন। অন্যটি হল ব্লমফিল্ড কামান। এটি অবশ্য ছয় পাউন্ডার; অর্থাৎ আরও বেশি ওজনের কামানের গোলা ব্যবহার করা যাবে এটায়। তবে এই দুটো কামানই বেশ পুরনো। আধুনিক কামান এসে যাওয়ার পর এই গোদা কামানগুলির ব্যবহার কমতে থাকে। তখন থেকেই অবহেলায় পড়ে থাকতে শুরু করে এগুলি। যে অবহেলা জারি থাকে গত বছর অবধি।

২০১৮ সালে নিমতলা ঘাট স্ট্রিটের পাশেই মহর্ষি দেবেন্দ্র রোডে এই কামান দুটিকে ‘আবিষ্কার’ করেন এক ব্যক্তি। জঞ্জালের স্তুপের ভেতর, নালার পাশে পড়েছিল এগুলি। দূর থেকে দেখলে, কামান বলে চেনাও যায় না সেগুলিকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরনো কলকাতার গ্রুপে কামানের অবস্থার ছবি পোস্ট করেন সেই ব্যক্তি। তখন থেকেই কামান দুটি পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই গ্রুপের তরফ থেকেই যোগাযোগ করা হয় ওই এলাকার স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে। পরবর্তীকালে কামান দুটিকে রং করে স্থাপিত করা হয় জোড়াবাগান অঞ্চলেই।