সার্চ ইঞ্জিনে ব্যস্ত? আপনার একটা ক্লিক সাহায্য করতে পারে গাছ লাগানোয়

মাত্র মাস দুয়েক আগের কথা। ব্রাজিলের আমাজন রেইন ফরেস্টে দাবানলের আগুনে পুড়ে গিয়েছিল কয়েক লক্ষ প্রাণ, অগুন্তি গাছ। পৃথিবীর ফুসফুসের সে-ক্ষত মেটেনি এখনও। কিন্তু কেউ কি জানেন, একটি সংস্থা নীরবে গাছ লাগিয়ে যাচ্ছে? হয়তো আপনারই পরোক্ষ সাহায্য মিশে রয়েছে তাতে। কীভাবে জানেন? ‘ইকোশিয়া’ নামের একটি সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে।

জার্মান এই সার্চ ইঞ্জিনটি প্রতিটি সার্চপিছু গাছ লাগিয়ে পৃথিবীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য ধরে রাখতে চায়। ক্রিস্টিয়ান ক্রোল ইয়াহু এবং বিং-এর প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এটি তৈরি করেছেন। গত ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন জলবায়ু সম্মেলন চলাকালীন চালু হয় এই ‘ইকোশিয়া’। যাঁরা বিভিন্ন তথ্যের খোঁজে রোজ ইন্টারনেটে ঘোরাফেরা করেন, তাঁদের হাতেই একটি অভিনব উপায় দিয়েছেন মাত্র ২৬ বছর বয়সি ক্রোল। প্রতি ৪৫টা সার্চে ইকোসিয়া একটি গাছ লাগানোর অর্থ জোগাড় করে। সবচেয়ে আনন্দের বিষয় এই যে, আজ অবধি প্রায় ৬ কোটির বেশি গাছ লাগিয়েছে এই জার্মান সার্চ ইউনিট। ব্রাজিল, ঘানা, পেরু, সেনেগাল, মরক্কো, বুরকিনা ফাসো সহ আরো নানা দেশে গাছ লাগিয়েছে তারা ইতিমধ্যেই। একটা সময় এর দৈনিক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার। কিন্তু ২২শে আগস্ট থেকে সেটা বাড়তে বাড়তে ২,৫০,০০০-এ পৌঁছে যায়। মাত্র এক বছরেই ইকোশসিয়ার ব্যবহারকারীর সংখ্যা আশ্চর্যজনক ভাবে বেড়েছে।

গুগলের মতো পরিধি বিস্তার না হলেও, ইকোসিয়া যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যেই। প্রত্যেকটি সার্চ ইঞ্জিনে তথ্য খুঁজতে গেলেই চোখে পড়বে কিছু বিজ্ঞাপনের লিংক। যাতে ক্লিক করলেই আয় হয় ইয়াহু, গুগল, ইকোশিয়ার মতো প্রত্যেক সার্চ ইঞ্জিনের। কিন্তু ইকোশিয়া এখানেও সকলের চেয়ে আলাদা। তাদের আয়ের ৮০% বিলিয়ে দেয় পরিবেশ রক্ষার কাজে, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার ও আমাজন রেইন ফরেস্ট রক্ষার খাতে।

এই ধরনের পদক্ষেপ আদতে আমাদের আরও খানিক বাঁচার সাহস জোগায়। ভরসা দেয় সবুজের। যেহেতু এই সমস্ত সার্চ ইঞ্জিনের সার্ভারগুলো চলে জীবাশ্ম ভিত্তিক জ্বালানি দিয়ে, তাতে বিপুল কার্বন মেশে পরিবেশে। ক্রোলের মতে, তাঁদের এই উদ্যোগ সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারে যে দূষণ ঘটছে গোটা পৃথিবীতে, তার দূরীকরণে খানিক হলেও সহায়তা করছে।