কী রে, কী হল? হাঁপাচ্ছিস কেন? কোথায় তুই?
আমি ঘর চলে এসছি রে।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ১০
পুলিশ যাতে দিল না। হেবি কেলিয়েছে।
হায় রাম। তুই তো ওষুদ নিয়ে আসছিলি। ক্যালাল কেন? মাস্ক পরিসনি?
পরেছিলাম। কালকে গেঞ্জি কেটে বানিয়েছি বললাম না?
তাহলে কেন ক্যালাল?
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ৯
ওদের মর্জি। অনেকক্ষণ কাউকে কেলায়নি আমায় পেয়ে গেছে কেলিয়ে দিয়েছে। আমি বললাম ওষুধ দিতে যাচ্ছি। ওষুধের পাতাটাও দেখালাম। কোনও কথাই শুনল না।
ইসস! খুব লেগেছে?
পিঠের ওপর দমাদ্দম মেরেছে। ফাইবারের ডাণ্ডা। খুব লাগে।
তোকে বেরাতে হবে না। ওষুদ লাগবে না আমার। তুই গরম জলে সেঁক দে।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ৮
বিকালে বেরোবো আবার। দাঁড়া না।
পাগলাপনা করিসনা নন্দু। ওষুদ লাগবে না বলছি।
কিন্তু তুই তো বললি আজ্জেন্ট।
দু’দিন পর হলেও হবে। আমি যোগাড় করে নেব।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ৭
আরে আমার নেওয়া হয়ে গেছে তো। কী করব এখন এটা?
ফিরিয়ে দে। তোর বন্ধুরই তো দোকান। লাল্টু না কী নাম। তুইই তো বলেছিলি।
আরে বাবা, লাল্টু মালিক নাকি? কাজ করে ওখানে।
তুই আসবি না ব্যাস। বেরাবি না তুই ঘর থেকে। আমি দেকছি কী করে আনানো যায়।
আরও পড়ুন
লকডাউন এর গপ্পো ৬
কী করে আনাবি শুনি? ওখানের কোনও দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না তুইই তো বললি।
সে আমি বুঝে নেব। তোকে ভাবতে হবে না। তুই চুপচাপ শুয়ে থাক দিকি ঘরে।
আচ্ছা, তোদের ওখানের পার্টির ছেলেরা খাবার দিচ্ছে বললি, ওদের বললে ওরা এনে দেবে না?
হ্যাঁহ! আর খাবারই দেবে না তো ওষুদ।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ৫
খাবার দেবে না মানে?
ওই একদিনই দিয়েছিল। তারপর নাকি পার্টি থেকে বলে দিয়েছে যারা ওদের ভোটার শুদু তাদের খাবার দিতে। আমি তো ভোট দিতে যাই না। আমায় দেবে না।
দেবে না মানে? দেবে না তো তুই খাবি কী?
ভয় খাস কেন? যা আছে চার- পাঁচদিন হয়ে যাবে। তারপর মুড়ি। জল মেরে মুড়ি চালাব।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ৪
কিচ্ছু ভাবিস না চাঁপা। আমি চাল ডাল দিয়ে আসব তোকে। দু’- তিন হপ্তা চালানোর মতো মালপত্তর দিয়ে আসব। কী কী লাগবে তুই একটা লিস্টি করে দে।
আরে বাবা, এখানে কি আমি একা? কত লোক আছি। শেফালি, রুকমা, আমিনা ওরা তো চালডাল পাচ্ছে। আমার সব ফুরিয়ে গেলেও জলে পড়ব না রে। অত ভাবিস না। তুই তোর ঘর দ্যাখ। তোরও তো কারখানার মাইনে দিল না। কী করে চালাবি?
মাইনের কথা ছাড়। চাকরিটাও যাবে।
তাহলে? কী করবি?
সে আমার ভাবা হয়ে গেছে। সব্জি বেচব। ঠেলা ভাড়া করে সব্জি বেচব। আমাদের বস্তির সবাই তাই করছে। কিন্তু তুই তো সেটাও পারবি না চাঁপা। তুই চালাবি কী করে? এ জিনিস এখন কদিন চলবে তার ঠিক আছে?
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ৩
কী একটা হারামজাদা জিনিস এল বল নন্দু? পিথিবিতে কোনওদিন এমন অবস্তা হয়েছে যে রেন্ডিখানা বন্দ হয়ে যাচ্ছে? ফুলিমাসি বলত সব ধান্দা বন্দ হয়ে গেলেও রেন্ডিগিরি কোনওদিন বন্দ হবে না। বন্দ হলে ঢ্যামনারা সব যাবে কোথায়? কিন্তু সে-ও তো বন্দ হয়ে গেল।
আরে আমেরিকা সবার বাপ, সেই আমেরিকার অবদি মেরে দিল। চোখেও দেখা যায় না, সেই জিনিস। ভাব।
রুকমা বলছিল এ নাকি ভগমানের মার। ভগমানই ভাইরাস পাঠিয়ে শাস্তি দিচ্ছে মানুষকে। পিথিবিতে নাকি আর মানুষ থাকবে না। শুধু গাছপালা জন্তু জানোয়ার পাখি এইসব থাকবে। সত্যি?
মোদীজি বলেছে নাকি?
সে জানিনা। রুকমা বলছিল।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ২
মোদীজি বললে সত্যি।
আর বলছিল ডাইনোসর নাকি ফিরে আসবে?
ডাইনোসর? ধুর! ডাইনোসর কোত্থেকে আসবে? কবে মরে ভূত হয়ে গেছে।
কী হবে তাহলে? যদি সত্যি ডাইনোসর ফিরে আসে?
কী আর হবে? এসেই আগে শোভাবাজার গিয়ে তোকে লেড়ো বিস্কুটের মতো খেয়ে ফেলবে। যত ফালতু কথা।
আরও পড়ুন
লকডাউনের গপ্পো ১
কিন্তু মানুষ যদি না থাকে আর? আমরা যদি সবাই মরে যাই?
সবাই মরে গেলে কোনও দুঃখ নেই রে চাঁপা। সবাই একসঙ্গে চলে গেলে আর কীসের দুঃখ বল? কেউ কেউ যদি বেঁচে যাই তাহলেই বরং দুঃখ। তাই না?
আমি রেন্ডি হয়ে মরতে চাই না রে নন্দু। আমি কি রেন্ডি হয়ে জন্মেছি? রেন্ডি হয়ে মরব কেন তবে?
সেই কবে তো তোকে বলেছিলাম বিয়েটা করে নে। কথাটা কানে নিলি না। বিয়ে করলে এখন একসাথে থাকতাম।
হ্যাঁ, আর তোর মা তোকে মুড়োঝ্যাঁটা মেরে বিদেয় করত।
সে মা’কে ঠিক মানিয়ে নিতাম।
উঁঃ! মানিয়ে নিতাম! বলতে পেরেছিস এখনও? এদ্দিন হয়ে গেল বলতে পেরেছিস?
মাক্কালি বলছি। এখন তো কালীঘাট দক্ষিণেশ্বর সব বন্ধ। নাহলে দেখতিস। একেবারে মান্সো, মিষ্টি, বউ নিয়ে ঘরে গিয়ে উঠতাম। তুই লাল শাড়ি। আমি হলুদ পাঞ্জাবি। পুরো ইস্টবেঙ্গল বিয়ে। আমার সব ভাবা হয়ে গেছে। লকডাউনটা উঠতে দে শুধু।
নন্দু।
এখন এইসব বলিস না। আমার ভাল্লাগছে না। ভয় করছে খুব।
ভয় কী রে? আমি আছি না?
আছিস তো?
এইত্তো আছি।
বিয়েফিয়ে দরকার নেই। শুদু মরে যাসনা নন্দু। বুঝলি? আমি মরব না। তুইও মরিস না।