সারা পৃথিবীতে করোনার সংক্রমণের মৃতের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। আর এর মধ্যে ১০ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটেছে ইতালিতে। এখনও পর্যন্ত ইতালিতে বার্ধক্যের হারকেই এর জন্য দায়ী করা হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যেও যে ব্যতিক্রমী গল্পের জন্ম দিলেন এক বৃদ্ধ। নাম মিস্টার পি। বয়স ১০০ ছাড়িয়েছে গত বছরেই। আর এই বয়সেও নতুন করে তৈরি করছেন ইতিহাস।
আরও পড়ুন
ভারতকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ, করোনার বিরুদ্ধেও জয়ের খোঁজ যোগিন্দর শর্মা-র
সপ্তাহ খানেক আগে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। শরীরে মিলেছিল করোনা ভাইরাস। শতবর্ষ পেরিয়ে এসেও যে সেই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করতে পারবেন এই বৃদ্ধ, এমনটা আশা করেননি কেউই। অথচ দেখা গেল এক সপ্তাহের মাথায় সুস্থ হয়ে উঠলেন মিস্টার পি। সমস্ত ডাক্তারি রিপোর্ট স্বাভাবিক। অতএব হাসপাতাল থেকে মুক্তি নিয়ে আবার ঘরে ফিরে গেলেন। হাসপাতালে তাঁকে নিতে এসেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। সবার সামনে যেন এক নতুন গল্প লিখলেন তিনি। আর রোগীদের কানে কানে সেই গল্প ছড়িয়ে পড়ল গোটা হাসপাতালে। মহামারীর মধ্যে যেন আশার আলো দেখাচ্ছেন এই মানুষটি। এমনটাই মনে করছেন রিমিনি শহরের ডেপুটি মেয়র গ্লোরিয়া লিসি।
আরও পড়ুন
করোনা-আক্রান্তের মৃত্যু হলে শেষকৃত্য ধাপায়, নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত প্রশাসনের
অবশ্য এমনটা তো এই প্রথম নয়। তাঁর যে জন্যই এক ভয়ঙ্কর মহামারীর মধ্যে। সেটা ১৯১৯ সাল। গোটা ইউরোপে তখন ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী স্প্যানিশ ফ্লু। আর ইতালির অবস্থা তখনও ভয়াবহ। এক বছরে অন্তত ৬ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিলেন সেবার। কিন্তু তার মধ্যেও দিব্যি নবজাতকের মুখভরা হাসি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন মিস্টার পি। আর শুধু তো মহামারী নয়, তাঁর জন্মের সময় চলছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। সেই স্মৃতি মলিন হতে না হতেই এসে গেল আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ। দুই বিশ্বযুদ্ধে ইতালিতে কতজন মানুষ মারা গিয়েছিলেন, তার সঠিক কোনো হিসাব নেই। কিন্তু এই সমস্ত ঝড় অতিক্রম করে ১০১ বছরে পা রেখেছেন মিস্টার পি। এখনও তৈরি করে চলেছেন ইতিহাস। আর অজস্র মৃত্যুর মাঝে সেটুকুই তো আশার আলো দেখাচ্ছে।