করোনার জেরে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, এ-বছর পুরীর রথ বেরোবে না পথে

রথযাত্রা নিয়ে সবারই আলাদা একটা উন্মেদনা থাকে। পাঁপড়ভাজা, ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েদের রথের গাড়ি টানা, সেইসঙ্গে রথের মেলা— আহা সে কি মজা! আর এইসব কথা উঠলে পুরী আসবে না, তা কি হয়! দেশ বিদেশ থেকে মানুষেরা রথযাত্রার সময় ভিড় জমান পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সামনে। এই বছর সেই চেনা ছবিটা আর দেখা যাবে না। কারণ? করোনা ভাইরাস। স্মরণাতীত কালের ইতিহাসে এই প্রথমবার পুরীর রথ বাইরে বের হবে না। হবে না সেই মহামিছিল।

আরও পড়ুন
মানসিক ভারসাম্য হারালেন লকডাউনে, কলকাতায় আত্মহত্যার চেষ্টা ইঞ্জিনিয়ারের

শুধুমাত্র ওড়িশা বা ভারত নয়, গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রার খ্যাতি। বছরের ওই দিন রীতিমতো আন্তর্জাতিক মিলনক্ষেত্র হয়ে যায় ওড়িশা। হবে নাই বা কেন, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে কত ইতিহাস, কত লোককথা, মিথ। প্রতিবছর কয়েক লক্ষ মানুষ ভিড় জমান এই ইতিহাসের অংশীদার হওয়ার জন্যই। নিজের নিজের রথে চড়ে রাস্তায় বেরোন জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা; সেই রশি ধরে টানতে টানতে তাঁদের ‘মাসির বাড়ি’ পৌঁছে দেন ভক্তরা। ধর্ম, আবেগ, উৎসব, ইতিহাস সব এখানে মিলেমিশে এক হয়ে গেছে।

আরও পড়ুন
উল্কি আঁকা এই মমিই আটকেছে করোনার সংক্রমণ, আজব দাবি স্থানীয় প্রশাসনের

এইবছরও সেই অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ভক্তরা। ২৩ জুন অর্থাৎ রথযাত্রার দিন আবারও জনসমাগম দেখত পুরী। কিন্তু সেই সমস্তটা থামিয়ে দিল করোনা। গোটা বিশ্বে ত্রাস সৃষ্টি করেছে এই ভাইরাস। ভারতের অবস্থাও খুব ভালো নয়। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তার মধ্যে চলছে লকডাউন। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন থেকে রথ তৈরির কাজ শুরু হওয়ার প্রথা ছিল। এবার সেটাও সম্ভব হয়নি। তারই মধ্যে ওড়িশার রাজ্য প্রশাসন ও মন্দির কর্তৃপক্ষের দফায় দফায় বৈঠক হয়। সেখানেই এইবছরের রথ যাত্রা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। দুই তরফেরই বক্তব্য, সবার আগে মানুষের জীবন। লকডাউন উঠে গেলে আবারও আলোচনায় বসা হবে। তবে আপাতত রথযাত্রার বিশাল শোভাযাত্রা এবছরের জন্য স্থগিত রাখার ব্যাপারটাই জোরালো হচ্ছে। তার বদলে মন্দির প্রাঙ্গণেই যাবতীয় অনুষ্ঠান হবে। এই খবর শুনে ভক্তরা হতাশ হবেন ঠিকই, কিন্তু আমাদের ভালোর জন্যই এটা করা প্রয়োজন। লকডাউন কেটে গেলে কী হয়, সেটাই এখন দেখার।