মানসিক ভারসাম্য হারালেন লকডাউনে, কলকাতায় আত্মহত্যার চেষ্টা ইঞ্জিনিয়ারের

চারিদিকে করোনার হাহাকার চলছে। দেশজুড়ে জারি লকডাউন। এরই মধ্যে কলকাতার রাস্তায় উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক যুবক। সবুজ জামা, একমুখ দাড়ি, শ্যামলা রঙের ছেলেটিকে দেখে মনে হয়, মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। এই লকডাউনের বাজারে আত্মহত্যা করারও চেষ্টা করেন তিনি। যাঁর আসল পরিচয় ওড়িশার একজন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। পুলিশ উদ্ধার করার পর মর্মান্তিক কাহিনিটি সবার সামনে আসে।

বিস্তারিত বলা যাক। সরোজ মঙ্গোরাজ ওড়িশার কটকের বাসিন্দা। সেখান থেকেই ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা। চাকরি সূত্রে কলকাতায় ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রীও। ইতিমধ্যেই করোনার দাপট বাড়তে থাকে দেশ জুড়ে। রাজ্যগুলো লকডাউন জারি করতে থাকে। পরে গোটা দেশেও লকডাউন ঘোষিত হয়। আন্তঃরাজ্য যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে এক মাস আগে তাঁর স্ত্রীও ওড়িশায় চলে গিয়েছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে একা আটকে পড়লেন সরোজ। বারবার চেষ্টা করা সত্ত্বেও কিছুতেই যেতে পারলেন না নিজের প্রিয়জনদের কাছে। দুশ্চিন্তা ক্রমশ কুরে খেতে লাগল তাঁকে। একসময় আর পারলেন না মাথা ঠিক রাখতে। মানসিক ভারসাম্যও ধীরে ধীরে বিগড়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এই ইঞ্জিনিয়ার।

পরিবারের কারোরই করোনা হয়নি। কিন্তু আরও একটা রোগ যে জাঁকিয়ে বসছে আমাদের, সরোজের ঘটনা সেটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। হ্যাঁ, মানসিক অবসাদ। বাঁশদ্রোণী থানার হস্তক্ষেপে সরোজ মঙ্গোরাজকে উদ্ধার করা হয়। আপাতত হোপ ফাউন্ডেশনের একটি হাসপাতালে তিনি ভর্তি আছেন। তাঁর স্ত্রীও চেষ্টা করছেন ফিরিয়ে আনার জন্য। চেষ্টা কতটা সফল হয়, সেই দিকেই লক্ষ্য থাকবে সবার।

More From Author See More