বাঁচার জন্য প্রয়োজন নেই অক্সিজেনের, বিরল প্রাণীর সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞান রহস্যময়। অবশ্য তার নিজের কিছু নিয়ম আছে। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে, চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে। এসবই ধ্রুব সত্য। তেমনই প্রত্যেক বহুকোষী জীবের বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন অবশ্যই প্রয়োজন। শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড বর্জন করেই বেঁচে থাকে সবাই। এমনটাই নিয়ম। অন্তত এতদিন তাই মনে করা হত। কিছু এককোষী ব্যাকটেরিয়া অবশ্য অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে বেঁচে থাকতে পারে। তবে বহুকোষী প্রাণী বা উদ্ভিদের বেঁচে থাকার প্রাথমিক শর্ত অক্সিজেন।

আরও পড়ুন
গ্রামে গ্রামে বৃক্ষরোপণ, প্রাকৃতিক ‘অক্সিজেন ব্যাঙ্ক’ এলাহাবাদে

কিন্তু নিয়ম প্রতি মুহূর্তে নিয়ম ভাঙতে গড়তেই এগোয়। তেমনই এক রহস্যের সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা। জেলিফিশ গোত্রের একধরনের প্রাণী, যার শরীরে কোথাও অক্সিজেন গ্রহণ করার কোনো পথ নেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরি করতে পারে, এমন কোন জিন নেই প্রাণীটির জিনোমে। মাইটোকন্ড্রিয়া হল একধরনের কোষীয় অঙ্গাণু, যার সাহায্যে অক্সিজেন ভেঙে অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট অণু তৈরি হয়। এই অ্যাডিনোসিন ট্রাইফসফেট বা এটিপি কোষের যাবতীয় কাজকর্মের জন্য শক্তির যোগান দেয়।

আরও পড়ুন
জলের পর এবার অক্সিজেন, বেঁচে থাকতে গেলে কিনতে হবে সবকিছুই

এইচ. সালমিনিকোলা নামের এই নিডেরিয়া প্রাণীটির শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়া নেই। এমনকি যেসব এককোষী প্রাণী অক্সিজেন ছাড়া শ্বসন চালায়, তাদের শরীরে মাইটোকন্ড্রিয়ার বিকল্প কোনী অঙ্গাণু উপস্থিত থাকে, যা দিয়ে এটিপি তৈরি করা যায়। কিন্তু এই পরজীবী প্রাণীটির শরীরে সেরকম কোন কাঠামোও নেই। তাহলে কি আশ্রয়দাতার শরীর থেকে সরাসরি এটিপি শুষে নেয় এরা? এরকমই নানা সম্ভাবনার কথা ভাবছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেসব কোনোটাই প্রমাণিত নয়। টেল হাবিব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকারী দলটি আপাতত এরকম নানা সম্ভাবনার বিষয়ে খতিয়ে দেখছে। নিকটবর্তী প্রাণীগুলির ডিএনএর সঙ্গে এই প্রাণীটির ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। গবেষণার শেষে হয়তো উঠে আসবে জীবনের অজানা কোনো রহস্য। আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে জীববিজ্ঞানীরা।

Latest News See More