জলের পর এবার অক্সিজেন, বেঁচে থাকতে গেলে কিনতে হবে সবকিছুই

মাত্র ১৫ মিনিটের জন্য ২৯৯ টাকা থেকে শুরু। অক্সিজেন। হ্যাঁ, বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছুই কিনে নেওয়ার অভ্যাস আমাদের শুরু হয়ে গেছে বহুদিন আগে থেকেই। শুরু জল দিয়ে, পানীয় জল।

আগামী একবছরের মধ্যে এদেশের ২১টি শহরে ফুরিয়ে যাবে ভূগর্ভস্ত জল। ‘কম্পোজিট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট ইনডেক্স’ এর গবেষণা থেকে জানা যায় ভারতের প্রায় ৬০ কোটি মানুষ এই মুহূর্তেই জলকষ্টের শিকার। এবং বছরে প্রায় ২ লক্ষ ভারতীয়ের মৃত্যু হয় জলবাহিত রোগে।

২০২০ সালের মধ্যে দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু ও হায়েদ্রাবাদের জলতল শূন্য হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছে এই সমীক্ষা। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের কাছে থাকবে না পানীয় জলটুকুও।

পৃথিবীর পরিশ্রুত জলের ৪ শতাংশের ভাগ পায় ভারত এবং একই সঙ্গে মজার বিষয় পৃথিবীর মোট দূষণের ১৬ শতাংশের ভাগও ভারতের। সম্প্রতি এই কফিনেই যেন পেরেক ঠুকেছে দিল্লির একটি ঘটনা! দিল্লির ভয়ানক পরিবেশ ইতোমধ্যেই সারা ফেলেছে গোটা দেশে। তীব্রতার মাত্রায় সবরকম মাপকাঠি ছাড়িয়ে গেছে এই শহর। দূষণের এক পর্দায় যেন ঢেকে আবছা করে দেওয়া হয়েছে এই শহর। শীতের মুখের ধোঁয়াশায় কাবু দিল্লিকে গ্যাস চেম্বারের সঙ্গে তুলনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী আরবিন্দ কেজরিওয়াল।

এরই মাঝে শহরে জুড়ে বসেছে এক নতুন ভাবনা। এই ভয়ানক পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করতে অক্সি পিওর নামে উদ্বোধন হয়েছে একটি অক্সিজেন বার-এর। সমাধান কতটা হবে বলা মুশকিল, তবে এ যেন মানুষের সামনে এক আয়না তুলে ধরা। চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো কী হতে চলেছে ভবিষ্যৎ!

মালিক আর্যবীর কুমার জানিয়েছেন, তাঁরা ১৫ মিনিটের জন্য মানুষকে বিশুদ্ধ অক্সিজেন অফার করছেন এবং সেগুলি পাওয়া যাচ্ছে সাতটি ভিন্ন সুবাসে। স্পেয়ারমিন্ট, পিপারমিন্ট, অরেঞ্জ, সিনামন, লেমনগ্রাস, ইউক্যালিপটাস এবং ল্যাভেন্ডার ফ্লেভার আপাতত পাওয়া যাচ্ছে এই পার্লারে।

একটি সরু নলের মাধ্যমে পনেরো মিনিটের জন্য নিতে দেওয়া হবে এই অক্সিজেন। দিনে একজন ব্যক্তি কেবলমাত্র একবারই নিতে পারবেন অক্সিজেন। ২৯৯ টাকা থেকে শুরু ১৫ মিনিটের এই পরিষেবা। এর ফলে মনোসংযোগ ও সচেতনতা বাড়বে, রক্ত পরিশ্রুত হবে, মাথা ব্যথা ও অবসাদ কমবে বলে দাবি করা হচ্ছে। ডিসেম্বর নাগাদ দিল্লি এয়ারপোর্টে আরেকটি শাখা খোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন এই অক্সিজেন বার-এর মালিক।