একটি ছোট্ট জেব্রা। সাদা চামড়ায় খেলে গেছে কালো কালো ডোরাকাটা দাগ। গা-টা যেন একটু অপরিষ্কার। তার যত্ন নিতে হাজির হয়েছেন একজন। কিন্তু কিছু যেন আলাদা লাগছে! যিনি এলেন, তাঁর পোশাকটা একটু অন্যরকম লাগছে না? সেটাই স্বাভাবিক, কারণ আপাদমস্তক জেব্রার মতোই সেজে এসেছেন তিনি। তাঁর জামাতেও কালো ডোরাকাটা দাগ। ওই ছোট্ট জেব্রাটির যে আর কেউ নেই। ওর যাতে একা না মনে হয়, তার জন্যই এমন ব্যবস্থা।
আরও পড়ুন
মারা গেছেন বন্ধু, তবু আশা ছাড়েনি কুকুরটি; টানা নয় বছর অপেক্ষা করেছিল স্টেশনে
শেলড্রিক ওয়াইল্ডলাইফ ট্রাস্টের পোস্ট করা এমন ছবিই সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হল। সমস্ত আকর্ষণের কেন্দ্রে ওই জেব্রা আর তাঁর দেখভাল করছেন যিনি। এই পুরো ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। আফ্রিকার নাইরোবিতে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। হঠাৎই হাঁকডাক শুরু হল চারিদিকে। সিংহের গর্জন! দেখা গেল, একদল জেব্রা ছুটে আসছে প্রাণপণে; আর তাদের পেছনে তাড়া করছে সিংহ। সেই সময়ই একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী জেব্রাকে থাবার সামনে পায় তারা। আর দেরি করেনি। কিন্তু পাশেই যে দাঁড়িয়েছিল ওর সন্তান, একটি পুরুষ জেব্রা। যার বয়স মাত্র কয়েকটি দিন। চোখের সামনে দেখল মৃত্যু।
আরও পড়ুন
বন্ধুত্বে বাধা নয় দূরত্ব – চেন্নাইয়ের কাছিম ও এক প্রবাসী ভারতীয়ের সম্পর্কের গল্প
পরে সেই ছোট্ট জেব্রাটিকেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটবর্তী কনজারভেশন ইউনিটে। নামও দেওয়া হয়— ডিরিয়া। কিন্তু সে তো অনাথ! সারাক্ষণ তো মায়ের সঙ্গে ছিল সে। এখন তাকে প্রয়োজনীয় খাবার দিতে গেলে যদি সমস্যা হয়? উপায়ও বের করা হল। ওই ইউনিটের যে কর্মী ডিরিয়াকে দেখাশোনা করবে, তাঁর পরনে থাকবে একটি বিশেষ জামা। সাদার ওপর কালো ডোরাকাটা; যাতে ওই ছোট্ট জেব্রার কখনও এটা না মনে হয় যে সে একা আছে।
আরও পড়ুন
আশ্রয়-হারা বিড়ালদের জন্য, ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে ঘর বানালেন এই ব্যক্তি
সত্যিই যেন সে ভরসা পেয়েছে এবার। যতই জেব্রা হোক, তারও তো মন আছে! দুঃখ আছে! শুধু জেব্রা কেন, প্রতিটা প্রাণীরই অনুভূতি আছে। আমরা যদি এভাবেই তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াই, তাহলে সেটাই তো অনেক বড়ো ব্যাপার। পারস্পরিক সহাবস্থানে বেড়ে ওঠে সমগ্র পরিবেশ। আমাদের চারপাশটাও এভাবেই সুন্দর হয়ে ওঠে এমন ঘটনায়।