বুকের পাঁজর খুলে বের করে আনা হয়েছে ফুসফুস। ডাক্তাররা উপর ছুরি চালালেন। নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষগুলো বাদ দিলেন। তারপর আবার সঠিক জায়গা বসিয়ে দিলেন। তারপর দিব্যি সুস্থ হয়ে উঠলেন ক্যানসার আক্রান্ত মানুষটি। নিজের ফুসফুস ভর্তি করে শ্বাস নিলেন আবারও। আর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস সাক্ষী থাকল এক বিরল ঘটনার। এ-ধরণের সফল অপারেশন ইতিপূর্বে খুব বেশি হয়নি। দুর্ঘটনার সম্ভবনাও থেকে যায় প্রচুর, তাই ডাক্তাররাও সহজে এমন অপারেশনে হাত দেন না। তবে ইজরায়েলের বেইলিনসন হসপিটালের সার্জেনরা সেই কঠিন প্রয়াসকেই সফল করে তুললেন।
আরও পড়ুন
ব্রেন ক্যানসাররের আরোগ্য খুঁজতে, ‘মিনি ব্রেন’ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা
চল্লিশোর্ধ্ব এক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ক্যানসার থাবা বসিয়েছে তাঁর বাঁদিকের ফুসফুসে। অবস্থা এতটাই গুরুতর যে, দ্রুত ফুসফুস বদলাতে হবে। অথচ কোনো অর্গ্যান ব্যাঙ্কেই ফুসফুস পাওয়া যাচ্ছে না। আপাতত যে কেমোথেরাপি দিয়ে রাখা হবে, তেমন অবস্থাও নেই রোগীর। তাই ঝুঁকি নিতে বাধ্য হলেন ডাক্তাররা। সার্জেন, অ্যানাসথেসিওলজিস্ট আর টেকনিশিয়ানদের নিয়ে একটা বড়ো টিম তৈরি হল। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলল অপারেশন।
আরও পড়ুন
মাত্র ৫ মিনিটে চিহ্নিত হবে শরীরের ক্যানসার, সাড়া জাগানো আবিষ্কার বাঙালি বিজ্ঞানীর
অনেকেই হয়তো ভাববেন, আপাতত একটি ফুসফুস অপারেশন করে বাদ দিয়ে দেওয়া যেত। তারপর আবার ফুসফুস পাওয়া গেলে প্রতিস্থাপন করা যেত। কিন্তু সেক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা আরও সঙ্কটজনক হয়ে উঠত বলেই মনে করছেন কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের ডিরেক্টর উরি ফয়েজউইৎজ। তাই ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। আর এই অপারেশনের সাফল্য যে আগামী দিনে ক্যানসারের চিকিৎসায় পথ দেখাবে, সে বিষয়ে আশাবাদী চিকিৎসকদের আরেকজন, প্রফেসর ড্যান আরভ।
আরও পড়ুন
ক্যানসারে আক্রান্ত তরুণ, মৃত্যুপথযাত্রীর শেষ ইচ্ছা রাখতে হাজির রূপম ইসলাম
ক্যানসারের নানা প্রকরণের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসার অন্যতম ভয়ঙ্কর। প্রতি বছর এই রোগে মৃতের সংখ্যাও নেহাৎ কম নয়। আর চিকিৎসা বলতে তো হাতে গোনা কয়েকটা পদ্ধতিই প্রয়োগ করা হয়। সেখানে এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি যে অনেকটাই আশার আলো দেখাচ্ছে, সে-কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়। আর প্রথম প্রচেষ্টাতেই এমন সাফল্য চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিরল তো বটেই।