সারা পৃথিবী ছেয়ে গেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে। কোনোভাবেই কমিয়ে আনা যাচ্ছে না সংক্রমণের হার। আসলে, শনাক্তকরণের আগেই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে এক শরীর থেকে অন্যের শরীরে। বর্তমানে যে করোনার টেস্টকিট ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে শনাক্ত করতে সময় লাগছে অনেকটাই। শনাক্তকরণের এই সময়ই কমিয়ে আনা এখন মূল লক্ষ্য বিজ্ঞানীদের। কমবেশি সমস্ত দেশেই চলছে গবেষণা। বাংলাদেশের একদল বিজ্ঞানীও সফলভাবে তৈরি করলেন কোভিড-১৯ টেস্টকিট। নেতৃত্বে মাইক্রোবায়োলজিস্ট ডঃ বিজন কুমার শীল।
আরও পড়ুন
প্রসবের আগে পর্যন্ত কাজের মধ্যেই, জমা দিয়েছেন করোনার টেস্টকিট
উল্লেখ্য, এই কিট মাত্র পনেরো মিনিটেই বলে দিতে পারবে কোনো ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত কিনা। তৈরির খরচ অবিশ্বাস্য। মাত্র ২৫০ বাংলাদেশি টাকা। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল নিয়ন্ত্রক সংস্থা সবুজ সংকেত দিয়েছে। শুরু হবে গণ উৎপাদন। বাংলাদেশের একটি সংস্থা জানিয়েছে, মাসে ১ লাখ কিট সরবরাহ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন
করোনা থেকে বাঁচতে হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইন, কিন্তু সকলের জন্য এক্ষুনি নয়
ডঃ বিজন শীল জানান, তাঁরা কাজ শুরু করেছিলেন জানুয়ারিতেই। সংক্রমণের পরিমাণ কী হতে পারে, তার ধারণা ছিল না অবশ্য। তবুও পূর্বাভাস পেয়েছিলেন মহামারীর। ২০০৩ সালে সার্সের সময়েও সিঙ্গাপুরে টেস্টকিট তৈরির কাজে ছিলেন তিনি। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই উনি জানান, সার্সের সঙ্গে করোনার মিল প্রায় ৮২ শতাংশ। দুটি ভাইরাসই আক্রমণ করে শ্বাসতন্ত্রকে। বাংলাদেশে তৈরি এই কোভিড-১৯ এর টেস্টকিট র্যাপিড ডট ব্লট অনেকটা সেই প্রযুক্তিতেই তৈরি। করা হয়েছে টেকনোলজি ট্রান্সফার।
আরও পড়ুন
কোভিড-১৯এর ওষুধের সন্ধানে প্রাথমিক সাফল্য, গবেষণায় যুক্ত এক বাঙালিও
এই টেস্টকিট পরীক্ষা করে, শ্বেতকণিকায় কোনো অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা। যেকোনো ভাইরাসের বাইরে প্রোটিনের স্তর থাকে। থাকে ডিএনএ বা আরএনএ। আর আক্রান্ত হওয়ার পর কোষ ভাইরাসের সেই প্রোটিন তৈরি করতে থাকে। এই প্রক্রিয়াকেই বাঁধা দিতে তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। ডট ব্লট পদ্ধতি শনাক্ত করে এই অ্যান্টিবডিকেই।
আরও পড়ুন
ভাল্লুকের পিত্তই সারিয়ে তুলবে কোভিড-১৯, আজব ‘চিকিৎসা’য় সায় চিন সরকারের
করোনা মোকাবিলার প্রথম এবং শেষ ধাপ পরীক্ষা। পরীক্ষা, শনাক্তকরণ, জনবিচ্ছিন্নকরণ। তিনটি ধাপে সংক্রমিতদের আলাদা করতে পারলেই আটকানো যাবে সংক্রমণ। এই প্রক্রিয়া যত দ্রুত হবে, হার কমানো যাবে ততই তাড়াতাড়ি। এই কিটের গণউৎপাদন সহজ করে দেবে লড়াই, এমনটাই আশা করছেন গবেষকদের একাংশ।