কোভিড-১৯ ঘুম কেড়ে নিয়েছে পৃথিবীর। এই মারণ রোগের জন্য দায়ী যে করোনা ভাইরাস, তা সবার জানা। তবে শুধু করোনা ভাইরাস বললে খানিকটা ভুল হবে। কারণ, করোনার একটি প্রজাতি সার্স-করোনাভাইরাস-২ এর জন্যই ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড-১৯। রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি প্রজাতি। সম্প্রতিই আরো ৬টি করোনার সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। বাদুড়ের শরীরে অস্তিত্ব মিলেছিল এই ভাইরাসের। বিজ্ঞানীদের গবেষণায় আবার উঠে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আরও পড়ুন
ভারতেও বাদুড়ের শরীরে হদিশ মিলল করোনার, সতর্ক চিকিৎসকরা
বাদুড় এবং করোনার জুড়ি নতুন নয়। প্রায় কয়েক লক্ষ বছর ধরে বাদুড়ের শরীরেই আস্তানা এই অণুজীবের। বহু যুগ ধরেই এই স্তন্যপায়ীর সঙ্গেই বিবর্তিত হয়ে এসেছে করোনা। সম্প্রতি জার্নাল সায়েন্টিফিক রিপোর্টে প্রকাশিত হয় এই তথ্যগুলি। ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়, আমাদের নানান ভাবে সাহায্য করলেও করোনার প্রাকৃতিক বাহক বাদুড়ই।
আরও পড়ুন
আরও ছয়টি নতুন প্রজাতির করোনা ভাইরাসের হদিশ, চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
শিকাগোর ফিল্ড মিউজিয়ামের বিজ্ঞানীদের একটি দল এই গবেষণা চালাচ্ছিলেন। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন বাদুড়ের প্রজাতির দ্বারা বাহিত করোনা ভাইরাসগুলির তুলনা করা। আফ্রিকা এবং পশ্চিম ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মোট ৩৬টি বাদুড়ের প্রজাতি নিয়েই চলছিল এই পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা থেকেই উঠে আসে এই তথ্য।
আরও পড়ুন
লকডাউনকে হাতিয়ার করেই, ইবোলার মহামারী থামিয়েছিল দরিদ্র আফ্রিকা
বাদুড় এবং করোনার বিবর্তনের এই ইতিহাস সাহায্য করবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াতেও। এমনই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। করোনা ভাইরাসের বিবর্তন পুরোপুরি বুঝতে পারলে, পরবর্তীকালে আটকানো যেতে পারে অজানা রোগের সংক্রমণও।
আরও পড়ুন
বন্ধ হল কুকুর-বিড়ালের মাংস, করোনার হানার পর আইনি বদল চিনে
তবে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী ভাইরাস বাদুড়ের দ্বারা বাহিত হয়নি। তবে বাদুড়ের শরীর খুঁজে পাওয়া ভাইরাসগুলির পরীক্ষায় এই করোনা ভাইরাসের বিবর্তনের সূত্র পাওয়া যেতে পারে। তাঁদের মতে, প্রত্যেক বাদুড়ের প্রজাতির মধ্যেই আলদা আলাদা প্রজাতির করোনা ভাইরাস রয়েছে। এই ভাইরাসগুলি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে কিনা তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ভাইরাসগুলির জন্য কী ধরণের রোগ হতে পারে, তাও অজানা।
আরও পড়ুন
করোনার পাশাপাশি হানা দিল ডেঙ্গুও, কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ইন্দোনেশিয়া
তবে শুধু বাদুড় নয়। আরো অনেক প্রাণীই করোনার বাহক। যার মধ্যে রয়েছে একাধিক স্তন্যপায়ী। ভাইরাসের ওই প্রজাতিগুলি বাদুড়ের কাছে বিপজ্জনক না হলেও, অন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে ভয়ঙ্কর রোগের কারণ হতে পারে। ভবিষ্যতের এই অজানা আশঙ্কার সমাধান খুঁজতেই হন্যে হয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।