কয়েক বছর আগে ইউটিউব ভিডিওতে আত্মপ্রকাশ তাঁর। তারপর থেকেই একাধিক বিতর্কের কেন্দ্রে এসেছেন। তিনি আর কেউ নন, হিরো আলম। সমস্ত বিতর্কের পরেও তাঁর জনপ্রিয়তায় আঁচড় পড়েনি। পা রেখেছেন সিনেমার জগতেও। কিন্তু তাঁর চেহারা, এমনকি গায়ের রং নিয়েও কুৎসিত মন্তব্য থামেনি। সেইসব সমালোচকদের মুখে যোগ্য জবাব দিয়ে নিজের মানবতার পরিচয় রাখলেন আশরাফুল আলম সঈদ, ওরফে হিরো আলম। প্রায় ৫০০টি নিরন্ন পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিলেন তিনি।
আরও পড়ুন
বাড়িতেই পৌঁছে যাবে স্যানিটারি ন্যাপকিন, মহিলাদের পাশে দাঁড়াতে মানবিক উদ্যোগ
পৃথিবীজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কথা তো আর নতুন করে কিছু বলার নেই। সংক্রমণ আটকাতে চিন্তিত প্রতিটা দেশ। আর তাই স্তব্ধ জনজীবন, শুরু হয়েছে লক-ডাউন। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন দিন আনি দিন খাই মানুষরা। বন্ধ শহরে রোজগারের কোনো অবকাশই যে নেই। কিন্তু রোজগার না হলে পেটের খাবার জুটবে কী করে?
আরও পড়ুন
রক্ত নেই ব্লাড ব্যাঙ্কে, নিজেই রক্ত দিয়ে বৃদ্ধাকে বাঁচালেন বৌবাজার থানার অতিরিক্ত ওসি
সেই অসহায় মানুষগুলোর পাশে এসে দাঁড়ালেন হিরো আলম। বাংলাদেশের উত্তর জনপদ জেলার শেরপুর ও নন্দীগ্রাম অঞ্চলের মানুষদের কাছে তিনি পৌঁছে দিলেন চাল, ডাল, তেল, আলু ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী। ছোটো ছোটো ছেলেমেয়ে অথবা দিনমজুর এবং পথবাসীদের হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দিচ্ছেন হিরো আলম, এমন ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আর উন্নয়নশীল দেশের প্রেক্ষাপটে এমন দৃশ্যই যে ভীষণভাবে প্রয়োজন।
আরও পড়ুন
দারিদ্র্যের সম্মুখীন হতে পারেন ১১ মিলিয়ন মানুষ, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের রিপোর্টে চাঞ্চল্য
গত নির্বাচনে বগুড়া-৪ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন হিরো আলম। তবে তিনি জয়ী হতে পারেননি। কিন্তু মানুষের পাশে দাঁড়াতে গেলে যে সেটা আবশ্যক নয়। তাঁর পক্ষে যতটুকু সম্ভব তা তিনি করেছেন, বলছেন হিরো আলম। এখন খানিকটা উপার্জন করতে পারলেও, তিনিও যে এক হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাই তাঁদের দুঃখ তিনি বোঝেন। কিন্তু সমাজের বিত্তবান মানুষদের উপার্জন মানুষের সত্যিকারের কাজে কতটুকুই বা লাগে? সেই প্রশ্নও তুলছেন তিনি। সেইসঙ্গে অনুরোধ করছেন, এই মর্মান্তিক সময়ে নিজেদের মনুষ্যত্বের পরিচয় দিতে এগিয়ে আসুক সবাই।
আরও পড়ুন
লকডাউনে স্তব্ধ রাজ্য, বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন যাঁরা
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু হয়েছে, সেটা তো মানুষকে হাতে হাত রেখেই উতরোতে হবে। সেইসঙ্গে দারিদ্র্য, অনাহার, অর্থকষ্টের সমস্যাও তো রয়েছে। বরং মহামারীর সময়েই তো এগুলো আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নেয়। সমস্ত বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে হিরো আলম যে পরিচয় রাখলেন, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে। কিন্তু তাঁর মতোই আরও অনেকে কি এমন কাজে এগিয়ে আসতে পারেন না? তাহলে হয়তো পৃথিবীর চেহারাটাই একটু অন্যরকম হবে।