বিধ্বংসী মুকেশ কুমার। আগুন ঝরালেন ঈশান পোড়েলও। তার সামনেই গুটিয়ে গেল কর্ণাটক। দীর্ঘ ১৩ বছর পর আবার রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে উঠল অভিমন্যু ঈশ্বরন-মনোজ তিওয়ারিরা। বাংলা ক্রিকেটের জন্য নিঃসন্দেহে এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। রঞ্জি ফাইনালে আগেও উঠেছে বাংলা, চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। কিন্তু এতটা কর্তৃত্ব নিয়ে, রঞ্জির এই বছরের সেরা ব্যাটিং লাইন-আপকে পর্যদুস্ত করে, হারের মুখ থেকে বারবার ঘুরে দাঁড়িয়ে একটা টিম যে এইভাবে ফাইনালে পৌঁছতে পারে, এমন নজির বঙ্গ ক্রিকেটে কবে দেখা গেছে জানা নেই। সেইজন্য এই দলটিকে অচেনা লাগে, আবার রঞ্জি জয়ের স্বপ্ন দেখায় আমাদের।
আরও পড়ুন
অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ ফাইনাল আজ, চিনে নিন ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের
এই ম্যাচে নায়ক বাছতে গেলে হিমশিম খেতে হবে। প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানের মাথায় ছয়টি উইকেট হারিয়ে বসে বাংলা। তারপর কি কেউ ভেবেছিল যে বাংলা ঘুরে দাঁড়াবে? সেই অবিশ্বাস্য কাজটাই করে দেখিয়েছিল অনুষ্টুপ মজুমদারের ব্যাট। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা, অভিমন্যু মিঠুনদের নির্বিষ করে দিয়েছিলেন তিনি। অনুষ্টুপের খেলায় একটি জড়তাহীন সৌন্দর্য আছে। তাঁর অন দ্য রাইট, ফ্রন্ট ফুট ড্রাইভ, লেগ গ্লান্স, পুল— দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। প্রথম ইনিংসে করা অনুষ্টুপের ১৪৯ নিঃসন্দেহে তাঁর জীবনের অন্যতম সেরা। আর তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছেন শাহবাজ আহমেদ ও আকাশদীপও। শাহবাজ এই বছরের আবিষ্কার। দুই ইনিংসেই ব্যাট হাতে তাঁর অবদান বাংলাকে সুবিধা দিয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালেও ওড়িশার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলা। তখনও ঝলসে উঠেছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার; যোগ্য সঙ্গত দিয়েছিলেন শাহবাজ আহমেদ। আর বলে হাতে ভয়ংকর হয়ে উঠেছিলেন মুকেশ কুমার, ঈশান পোড়েলরা। এখানেও পুনরাবৃত্তি দেখা গেল। লোকেশ রাহুল, মণীশ পান্ডে, করুণ নায়ার সমৃদ্ধ কর্ণাটকের শক্তিশালী ব্যাট মাথা তুলতে পারেনি তাদের সামনে। ১২২ রানে শেষ হয়ে যায় তারা। এদিকে বাংলাও দ্বিতীয় ইনিংসে কম রান করে। ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল ম্যাচ ঘুরে যাওয়ার। আজ সেটা হতে দিলেন না মুকেশ কুমার। বল হাতে একাই গুড়িয়ে দিলেন কর্ণাটককে।
আরও পড়ুন
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন যুবরাজ, ক্রিকেটের সঙ্গে শেখালেন জীবনেরও পাঠ
এই গোটা ক্রিকেট মরসুমে বাংলাকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। কিন্তু সেসব দলের পারফরমেন্সে কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। ২০০৬-২০০৭ মরসুমের পর আবারও ফাইনালে তারা। এখন, সবাই অপেক্ষায়। এই বাংলা পারবে না? এই বাংলা পারবে!