এক ধাক্কায় সংক্রমণ বাড়লো ১০ জন। করোনার থাবা হঠাৎ করেই প্রকট হল রাজ্যে। মঙ্গলবার রাতেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৭। উল্লেখ্য, আলিপুরের এক চিকিৎসক করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। এবার তাঁর পরিবারের তিন সদস্যের টেস্টেও ধরা পড়ল করোনা ভাইরাস। দমদম আইএলএসে ভর্তি ইতালি ফেরত এক প্রৌঢ়ার রিপোর্টও পজিটিভ। তাঁর স্বামীও ভর্তি একই হাসপাতালে।
আরও পড়ুন
দারিদ্র্যের সম্মুখীন হতে পারেন ১১ মিলিয়ন মানুষ, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের রিপোর্টে চাঞ্চল্য
এছাড়া আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের এক যুবক, সল্টলেক আমরিতে ভর্তি বছর পঞ্চাশের এক মহিলা, ঢাকুরিয়া আমরিতে থাকা টালিগঞ্জের এক বাসিন্দা। এরই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও হল ৫। যার মধ্যে রয়েছে হাওড়ার গোলাবাড়ির ৫২ বছরের, প্রৌঢ়া মহিলাও। ভর্তি ছিলেন হাওড়ার আইএলএসে। ফিরেছিলেন ডুয়ার্স থেকে। এনআরএসে মৃত আরেক মহিলার রিপোর্টেও পজিটিভ এল। সন্দেহ করা হলেও আগে নিশ্চিত করা যায়নি। এদিন তাঁর টেস্টেও মিলল ভাইরাসের উপস্থিতি।
আরও পড়ুন
বাতাসেই করোনা মারবে এই মেশিন, চমকপ্রদ আবিষ্কার বাঙালি গবেষকের
এই পরিস্থিতি লড়াই জারি রাখতে মরিয়া চেষ্টা করছে রাজ্য। একদিনে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে পাঠানো হল হোম কোয়ারেন্টাইনে। মোট কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১লাখ ৪৪ হাজার মানুষ। এদিন ২৪ ঘণ্টার আইসোলেশনে রাখা হল আরও ৮৭ জনকে। যার মধ্যে ৫ জনের রিপোর্ট ভাইরাসের উপস্থিতি জানিয়েছে। এই নিয়ে সব মিলিয়ে বিভিন্ন হাসপাতালের মোট ২৩৮ জন আইসোলেশন ওয়ার্ডে রয়েছেন।
আরও পড়ুন
ছেঁড়া রেনকোট-হেলমেট পরেই করোনার সঙ্গে লড়াই চিকিৎসকদের
এতজনকে একসঙ্গে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখার কারণ হিসাবে স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা জানিয়েছেন, যাঁরা সংক্রমিত তাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন কমবেশি অনেক মানুষই। তাই সম্ভাব্য আক্রান্তদের আলাদা করার একটি চেষ্টা। নয়তো ছড়াতে পারে গোষ্ঠী সংক্রমণ।
আরও পড়ুন
আবিষ্কারের পথে কোভি-১৯এর ওষুধ, চূড়ান্ত পরীক্ষা আগামী সপ্তাহে
তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতে আশার আলো দেখালো চিকিৎসকরা। তিন করোনা আক্রান্ত বাড়ি ফিরলেন সুস্থ হয়ে। স্কটল্যান্ড ফিরত এক তরুণী, দক্ষিণ কলকাতার পণ্ডিতিয়া স্ট্রীটের এক ব্যবসায়ী এবং লন্ডনফিরত আমলাপুত্র। অবশ্য এখনও ১৪ দিন তাঁদের বাড়িতে জনবিচ্ছিন্ন থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন
লকডাউন পেরোলে কাজ হারাতে পারেন ভারতের ১৩ কোটি মানুষ!
তবে আশ্বস্ত করেছেন স্বাস্থ্য দফতরের আধিকেরা। জানিয়েছেন এখন লোকাল ট্রান্সমিশনের জন্যই বাড়ছে সংখ্যা। সোশ্যাল ট্রান্সমিশন হয়নি। অনুরোধ করেছেন, রাজ্যবাসী সবাইকে সতর্ক এবং দায়িত্বশীল হতে।
কঠীন এই পরিস্থিতিতে গভীর হচ্ছে চিন্তার ভাঁজ। এখন দেখার, স্টেজ থ্রি-র দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে কত দ্রুত ক্ষতদাগ মুছে ফেলতে পারে বাংলা। স্বাস্থ্য দফতর এবং চিকিৎসকদের পাশাপাশি মারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ে যাওয়ার এই দায়িত্ব আমাদের সবার।