হাতির দলের ওপর অমানবিক অত্যাচার, গ্রেপ্তার তামিলনাড়ুর তিন আদিবাসী যুবক

বিগত কয়েক বছর ধরে ভারতে বন্যপ্রাণীদের উপর অমানবিক আচরণের ঘটনা বারবার শিরোনামে উঠে এসেছে। তামিলনাড়ুর সাম্প্রতিক ঘটনা আবারও বুঝিয়ে দিল, সচেতনতার কাজ প্রায় কিছুই এগোয়নি। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠা দুটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে তিনজন আদিবাসী যুবক একটি হাতির দলের উপর নির্মম শারীরিক নির্যাতন চালাচ্ছে। ঢিল ছুঁড়ে বিরক্ত করার পাশাপাশি মোটা লাঠি নিয়ে প্রহার করতে থাকে হাতির দলের ওপর। এমনকি শেষ পর্যন্ত দলটির পিছনে পোষা কুকুর লেলিয়ে দেয় তারা। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হতেই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে তামিলনাড়ুর তিরুমূর্তি ড্যাম সংলগ্ন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, সকালে গরু চড়াতে জঙ্গলের ভিতরে গিয়েছিল চার যুবক। তবে সীমানা লঙ্ঘন করে সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে ঢুকে পড়ে তারা। সেখানেই তিনটি হাতির একটি দলকে দেখতে পায়। দলের মধ্যে একটি শিশু হাতিও ছিল। প্রথমে দূর থেকে ঢিল ছোঁড়া চলতে থাকে। এরপরেই কাছে গিয়ে মোটা গাছের ডাল দিয়ে প্রহার করতে থাকেন তিন যুবক। আর অন্যজন পুরো ঘটনাটি ক্যামেরাবন্দি করেন। হাতির দল পালিয়ে যেতে গেলে তাদের পিছনে পোষা কুকুর লেলিয়ে দেওয়া হয়। এবং শেষ পর্যন্ত ঢিল ছুঁড়তে থাকে যুবকরা। এরপর নিজেরাই মজা করে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে সম্পূর্ণ ভিডিও। তবে সঙ্গে সঙ্গেই নিন্দায় সরব হন পরিবেশ সচেতন মানুষ। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠার পাশাপাশি বনবিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই ভিডিও।

ভিডিও থেকেই তিন যুবককে শনাক্ত করে প্রশাসন। সঙ্গে সঙ্গে তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়। বন্যপ্রাণ সুরক্ষা আইনের ৩২, ৩৯ এবং ৫১ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আগামী সপ্তাহেই আদালতে উঠবে এই মামলা। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত তিন যুবকের নাম কালিমাথু, সেলবম, এবং অরুণ কুমার। প্রত্যেকের বয়স ২৫ থেকে ৩২-এর মধ্যে। এরা তিনজনেই তিরুমথি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বলেই জানানো হয়েছে। যদিও আক্রান্ত হাতির দলটিকে এখনও শণাক্ত করা যায়নি। দ্রুত সেই ব্যবস্থা করে তাদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখা হবে বলেই জানিয়েছে বনবিভাগ। বন্যপ্রাণীদের উপর অমানবিক আচরণের ঘটনায় সাধারণত শহর বা গ্রামের আধুনিক মানুষরাই অভিযুক্ত হয়েছেন বাররবার। সাম্প্রতিক এই ঘটনা বুঝিয়ে দিল, আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যেও একইরকম হিংসা ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমশ। যদিও প্রশাসন সূত্রে খবর, স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। এমনকি তাঁরাও এই তিন যুবকের শাস্তি দাবি করেছেন।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পরিবেশ বাঁচাতে ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষকের হাতিয়ার শিশুরাই

More From Author See More