মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকেই বারবার উঠে আসছে সংক্রমণের খবর। বিগ-বি থেকে শুরু করে বলিউডের ও অন্যান্য সেক্টরের অনেক সেলিব্রেটির অসুস্থ হওয়ার ঘটনা নিয়ে চিন্তিত সাধারণ মানুষও। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সেই সাধারণ মানুষরাই কি আদৌ নিরাপদ? এই প্রশ্নই উস্কে দিয়ে যাচ্ছে সোমবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অশোকের মৃত্যু।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা অশোক রুইদাসকে সোমবার ধুম জ্বর নিয়ে কলকাতায় নিয়ে এসেছিল তার পরিবার। কিছুদিন আগেই টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিলেন অশোক। আর তারপরেই আসে জ্বর। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে এগোতে থাকলে তাঁকে নিয়ে আসা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। কিন্তু গায়ে জ্বর থাকায় তাঁকে সেখানে ভর্তি নেওয়া হয়নি। রেফার করা হয় শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। তারপর সেখান থেকে আবার রেফার করা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে প্রথমেই করোনা পরীক্ষার কথা বলে একাধিক ফর্ম ফিল-আপ করতে বলা হয় পরিবারকে। অশোক তখন অ্যাম্বুলেন্সেই শুয়ে ছিলেন। কিন্তু ফর্ম ফিল-আপ করতে করতেই সবাই লক্ষ্য করে, অশোক আর কথা বলছেন না। ইতিমধ্যে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে এই ঘটনার দায় অস্বীকার করা হলেও তিন হাসপাতালের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে অশোকের পরিবার। তাদের মতে, প্রথমেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হলে তার এই মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটত না। চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, যেহেতু কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ বর্তমানে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে স্বীকৃত, তাই সেখানে রেফার করা যেতে পারে। কিন্তু রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক হলে তাকে এভাবে হয়রান করার কোনো অর্থ হয় না। বিশেষ করে কোভিড চিকিৎসার পরিকাঠামো এখন সমস্ত হাসপাতালেই আছে।
কিছুদিন আগেই ইছাপুরের এক যুবককে কলকাতায় হাসপাতালের দরজায় দরজায় চিকিৎসার জন্য ঘুরে বেড়াতে হয়েছে। আর তারপর সোমবার ঘটল এই ঘটনা। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি রোগীদের সুরক্ষার ব্যাপারে চিন্তিত চিকিৎসকরা? স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে যখন বারবার বলা হচ্ছে কোনো রোগীকেই ফেরানো যাবে না, তখন হাসপাতালগুলির এমন আচরণ কেন? সেলিব্রেটিদের নিরাপত্তার পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের দিকে কি একটুও নজর দিতে পারি না আমরা?
আরও পড়ুন
শুধুমাত্র চিকিৎসার অভাবেই ভারতে মারা যান ১০ শতাংশ মানুষ, বলছে সমীক্ষা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মেলেনি করোনার চিকিৎসা, মেঝেতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যা কলকাতার একই পরিবারের তিনজনের