তৈরির পথে 'ইউজ-অ্যান্ড-থ্রো' ভেন্টিলেটর, চলবে বিদ্যুৎ ছাড়াই

জেরক্স মেশিন বলতে আমরা শুধু কোনো ডকুমেন্টের ফটোকপি করার যন্ত্রকেই বুঝি। হ্যাঁ, জেরক্স ফটোকপির মেশিন বটে, তবে এটি আদতে আমেরিকান একটি কম্পানির নাম। বলাই বাহুল্য, সারা বিশ্বে প্রিন্টিং এবং ফটোকপির বাজারে একাধিপত্য জেরক্সেরই। এবার করোনা ভাইরাসের এই ভয়ঙ্কর মহামারীর সময়ে জেরক্স নিল নতুন উদ্যোগ। ঘোষণা করল ‘ইউজ অ্যান্ড থ্রো’ ভেন্টিলেটরের উৎপাদনের কথা।

গোটা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করেছে করোনা ভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সাড়ে তেরো লাখ। সেই সঙ্গে হসপিটালগুলিতে হাহাকার পড়েছে ভেন্টিলেটরের। এই চাহিদা দূর করতেই জেরক্সের এই উদ্যোগ। চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুতিকারক সংস্থা ভেরট্রানের সঙ্গে যুগ্মভাবে এই কাজ করছে তারা। ‘Go2vent’ নামের এই যন্ত্রের তৈরির কাজ শুরু হবে খুব শীঘ্রই। দামও হবে খুব কম। জরুরি প্রয়োজনে বিপুলভাবে ব্যবহার করা যাবে এই যন্ত্র।

এই যন্ত্রের ব্যাপারে জেরক্স যা জানায়, তা অবাক করার মতো। এই যন্ত্র ইউ এন্ড থ্রো। করোনায় আক্রান্ত যাঁদের উপসর্গ খুব বেশি প্রকট নয়, তাঁদের সাহায্য করবে এই যন্ত্র। ফলে আইসিইউ-গ্রেডের যে ভেন্টিলেটর, সেটি ব্যবহার করা যাবে যাঁদের অবস্থা বিপজ্জনক কেবল তাঁদের জন্য। ফলে চাপ কমবে অনেকটাই।

ভোরট্রানের সিইও গর্ডন ওয়াং এই বিষয়ে জানান, তাঁদের এখন একটাই লক্ষ্য। যত বেশি সম্ভব মানুষের প্রাণ বাঁচানো। দুই কম্পানিই আশা করছে, জুনের মধ্যে প্রতি মাসে দেড় থেকে দু’ লক্ষ ভেন্টিলেটরের জোগান দিতে পারবে। চাহিদার জন্য বাড়িয়ে এক মিলিয়নও করতে পারে উৎপাদন। আনুমানিক এর দাম হবে ১২০ মার্কিন ডলার। অর্থাৎ মাত্র ৯০০০ ভারতীয় মুদ্রায় ভেন্টিলেটর।

হ্যান্ডস-ফ্রি এই যন্ত্র কাজ করে একটি কম্প্রেসারের মাধ্যমে। মিনিটে দশ লিটার রেটে প্রবাহ করাতে পারে অক্সিজেন অথবা বায়ু। এবং কোনোরকম বিদ্যুৎ বা ব্যাটারির দরকার পড়ে না। কাজেই দুর্গম জায়গাতেও অসুবিধা হবে না রোগীদের।

অন্যদিকে আমেরিকার সরকার বহু কম্পানিকেই অনুরোধ করেছে ভেন্টিলেটর তৈরি করার জন্য। গাড়ি তৈরির কম্পানি ফোর্ডকেও আর্জি জানানো হয়েছে করোনার যুদ্ধে সামিল হওয়ার। কারণ সাড়ে তিন লাখের বেশি লোক আক্রান্ত হওয়ায় সকল হাসপাতালেই প্রায় স্বল্পতা দেখা দিয়েছে কৃত্রিম এই শ্বসন যন্ত্রের। এই প্রবল সংকটের মুহূর্তে জেরক্সের এই নতুন ভাবনা আশার আলো দেখাচ্ছে আমেরিকাসহ গোটা পৃথিবীকেই।