প্রায় ৮ লক্ষ বছর আগে ইউরোপের পশ্চিম অঞ্চলে বাস করত এই প্রাণীটি। মানুষের পূর্বপুরুষ ঠিক নয়, তবে মানুষের সঙ্গে এদের বেশ সাদৃশ্য ছিল। স্বজাতির মাংস খেয়েই বেঁচে থাকত এই প্রাণী। বিজ্ঞানসম্মত নাম হোমো অ্যান্টেসেসর। আর হোমিনিন বর্গের এই প্রাণীটির শরীরেই পাওয়া গেল পৃথিবীর প্রাচীনতম ডিএনএ। বয়স প্রায় ৮ লক্ষ বছর। অথচ এই প্রাচীন ডিএনএ থেকে এখনও অনেক কিছুই জানা সম্ভব বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
১৯৯৪ সালে স্পেন থেকে পাওয়া গিয়েছিল একটি জীবাশ্ম। প্রাণীটি যে মানুষের সমগোত্রীয়, সেকথা বুঝতে সমস্যা হয়নি। তারপরেই শুরু হয় গবেষণা। এত বছরের পুরনো একটি জীবাশ্মের শরীরে কোনো অংশই আর তেমন কাজে লাগেনি। তবে হাড় ও দাঁতের অবস্থা খুব খারাপ ছিল না। এটুকুই ছিল গবেষণার সম্বল। আর সেখান থেকেই অসাধ্য সাধন করলেন ইউনিভার্সিটি অফ কোপেনহেগেনের গবেষকরা। সঙ্গে ছিলেন স্পেনের ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার অন হিউম্যান ইভোলিউশনের বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্র।
স্পেনে যে জীবাশ্মটি পাওয়া গিয়েছিল, তার দাঁত থেকেই পাওয়া গিয়েছে প্রাচীন ডিএনএ তন্তু। সাধারণত ৩ লক্ষ বছরের বেশি বাঁচে না এই তন্তু। তবে বিজ্ঞানীরা প্যালিওপ্রোটিওমিক্স পদ্ধতিতে প্রাচীন প্রোটিন থেকে উদ্ধার করেছেন ডিএনএ সংকেত। আর ফলাফল দেখে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত সকলে। মানুষের সঙ্গে যে এই প্রাণীটির ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল, একথা আগেই বুঝতে পেরেছিলেন বিজ্ঞানীরা। ডিএনএ সংকেত থেকে সেই তথ্য আবারও প্রমাণিত হল। দেখা গিয়েছে মানুষের পূর্বসূরি নিয়ানডার্থাল এবং ডেনিসোভান প্রজাতির সঙ্গে যথেষ্ট জিনগত সাদৃশ্য আছে এই ক্যানিবাল প্রজাতিটির। এই আবিষ্কার যে মানুষের বিবর্তনের প্রক্রিয়াকে বুঝতে যথেষ্ট সাহায্য করবে, সে ব্যাপারে আশাবাদী গবেষকরা।