পৃথিবীর ১০ প্রাচীনতম ‘জীবিত’ ভাষা, তালিকায় রয়েছে ভারতও

/১০

একটা সময় অঙ্গভঙ্গি করেই মনে ভাব আদানপ্রদান করত মানুষ। তারপর ধীরে ধীরে জন্ম নেয় ভাষার। সেটা আজ থেকে ১০ হাজার বছর আগের কথা। তারপর একাধিক ভাঙা-গড়ার মধ্যে দিয়েই এগিয়েছে ভাষার ইতিহাস। বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে বদলেছে তার ধরনও। তবে হারিয়ে যায়নি সে-যুগের সব ভাষা। বর্তমান বিশ্বে এমনই কিছু ভাষা প্রচলিত রয়েছে, যাদের জন্ম সহস্রাধিক বছর আগে। এক ঝলক দেখে নেওয়া যায় এমনই ১০টি প্রাচীনতম ‘জীবিত’ ভাষাকে…

/১০

ম্যান্ডারিন— বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের কথ্য ভাষা হিসাবেই পরিচিত ম্যান্ডারিন। শুধু তাই নয়, প্রাচীনতম ভাষাদের মধ্যেও ম্যান্ডারিন অন্যতম। এই ভাষার আনুমানিক বয়স ৩৩০০ বছর। ১২৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে চিনে শাং বংশের রাজাদের সময় জন্ম নিয়েছিল এই ভাষা।

/১০

হিব্রু— ম্যান্ডারিনের পরই এই তালিকায় জায়গা করে নেয় হিব্রু ভাষা। হিব্রুর বয়স প্রায় ৩ হাজার বছর। ইজরায়েল তো বটেই, তাছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তে বসবাসকারী ইহুদিরা প্রাধান্য দেন হিব্রুকেই। বর্তমানে এই ভাষার ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৯০ লক্ষ।

/১০

তামিল— প্রাচীনতম ভাষার তালিকায়, ভারতের নাম আসবে না তাও কি হতে পারে? দেখতে গেলে হিব্রুর প্রায় সমবয়সি তামিল। একটা সময় প্রাচীন এই দ্রাবিড়িয়ান ভাষাই মূল কথ্য ভাষা ছিল গোটা দাক্ষিণাত্যে। বর্তমানে তামিলনাড়ু ছাড়াও, শ্রীলঙ্কা এবং সিঙ্গাপুরের সরকারি ভাষা তামিল। ব্যবহারকারীর সংখ্যা সবমিলিয়ে প্রায় ৭ কোটি।

/১০

ফার্সি— তামিলের মতো প্রাচীন না হলেও, ফার্সি ভাষার বয়স প্রায় দু-হাজার বছর। সবমিলিয়ে আজও ১১ কোটি মানুষ কথা বলে ফার্সিতে। প্রাচীন সাহিত্যের ক্ষেত্রেও ফার্সির অবদান অনস্বীকার্য। উর্দু কিংবা অন্যান্য ভাষায় ফার্সির প্রভাবও যথেষ্ট। তবে মূলত তাজাকিস্তান ও আফগানিস্তানে এই ভাষা বহুল-ব্যবহৃত হলেও সেখানে এই ভাষা পরিচিত যথাক্রমে তাজিকি ও দারি নামে। ভারতের কাশ্মিরেও প্রচলন রয়েছে ফার্সির।

/১০

আরবি— মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীনতম ‘জীবিত’ ভাষাদের মধ্যে আরও একটি অন্যতম নাম আরবি। এই ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া যায় ৫১২ খ্রিস্টাব্দে। বর্তমানে ২৮টি দেশের ৪২ কোটি মানুষ ব্যবহার করেন এই ভাষা। তবে বাংলা কিংবা তামিলের মতোই ক্ষেত্রবিশেষে একাধিক উপভাষা রয়েছে আরবির।

/১০

গ্রিক— এশিয়া ছেড়ে এবার পা রাখা যাক ইউরোপে। ইউরোপের প্রাচীন সাম্রাজ্যগুলির কথা উঠলে, প্রথমেই উঠে আসে গ্রিসের নাম। প্রাচীন বিশ্বের সংস্কৃতি, চিন্তন, গণিত কিংবা দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল গ্রিস। কাজেই সে-রাজ্যে আধুনিক ভাষার প্রচলন ছিল, এমনটা চোখ বুজিয়েই বলে দেওয়া যায়। কিন্তু কবে জন্ম গ্রিক ভাষার? গবেষণা বলছে, খ্রিস্টের জন্মের ১৫০০ বছর আগে থেকেই চলছে এই ভাষা।

/১০

ল্যাটিন— গ্রিসের সঙ্গে একবাক্যেই উচ্চারিত হয় রোমের নাম। খ্রিস্টের জন্মের আনুমানিক ৭৫০ বছর আগে প্রচলন হয় ল্যাটিন ভাষার। তবে এই ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় বংশের মধ্যে পড়ে। একটা সময় পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসলেও, উনবিংশ শতকে এই ভাষা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া রোমে। বর্তমানে ভ্যাটিকান সিটির প্রধান সরকারি ভাষা ল্যাটিন। তাছাড়া পোল্যান্ডও স্বীকৃতি দিয়েছে এই ভাষাকে।

/১০

বাস্কো— মাত্র সাড়ে ৭ লক্ষ মানুষ বর্তমানে ব্যবহার করেন এই ভাষা। স্পেন এবং দক্ষিণ ফ্রান্সে এই ভাষার জন্ম নিয়েছিল আজ থেকে প্রায় হাজার দুয়েক বছর আগে। তবে মজার বিষয় হল, ইউরোপে এই ভাষা প্রচলিত হলেও অন্যান্য ইউরোপিয়ান ভাষার সঙ্গে এতটুকুও মিল নেই বাস্কো ভাষার। তার একটা কারণ, এই ভাষা মূলত ব্যবহার করেন আদিবাসীরা। বাস্কো এই তালিকায় একমাত্র আদিবাসী ভাষাও বটে।

১০/১০

লিথুয়ানিয়ান— ইউরোপিয়ান ভাষাগোষ্ঠীর সঙ্গে যথেষ্ট মিল থাকলেও, আদতে এই প্রাচীন ভাষা প্রোটো-ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। লিথুয়ানিয়ায় জন্ম হলেও, সমগ্র বাল্টিক অঞ্চলেই কমবেশি প্রভাব রয়েছে লিথুয়ানিয়ান ভাষার। সবমিলিয়ে ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লক্ষ। অন্ততপক্ষে দেড় হাজার বছর বয়স হলেও, ঠিক কবে থেকে প্রচলন হয়েছিল এই ভাষার, সে-ব্যাপারে কোনো লিখিত নথি নেই কোথাও…

Powered by Froala Editor

More From Author See More