সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি জনমানবহীন দ্বীপের ছবি। চারিদিকে নীল সমুদ্র; আর সেই ছোট্ট দ্বীপের মধ্যে ততধিক ছোটো একটি বাড়ি। সবুজের মধ্যে একটি ছোট্ট সাদা বিন্দুর মতো। আর ছবির সঙ্গেই জানানো হয়, এই বাড়িটি পৃথিবীর সবচেয়ে একাকী বাড়ি। আশেপাশে নেই একটিও প্রতিবেশী। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, কোথায় আছে এই বাড়ি?
অনেকেই অবশ্য ছবিটি সম্বন্ধে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। অনেকে বলেছিলেন এমন কোনো বাড়ির অস্তিত্ব কোথাও নেই। সবটাই আসলে গ্রাফিক্সের কারসাজি। তবে এর মধ্যেই জানা গেল, ভাঁওতা নয়; সত্যিই এমন একটি বাড়ির অস্তিত্ব আছে। আর সেই বাড়িটিই দেখা গিয়েছে ভাইরাল ছবিতে। আইসল্যান্ডের দক্ষিণে এলিরি দ্বীপে সত্যিই এমন একটি বাড়ি আছে। এমনকি সেখানেও কোনো স্থায়ী বাসিন্দা থাকেন না।
জানা গিয়েছে, বর্তমানে একেবারে জনবর্জিত হলেও একসময় এই দ্বীপে ৫টি পরিবারের বাস ছিল। তবে গত শতাব্দীর শুরু থেকেই একে একে প্রত্যেকে এলিরি দ্বীপ ত্যাগ করতে থাকেন। শেষ যে পরিবারটি ছিল, তাঁরাও ১৯৩০ সালে দ্বীপ ত্যাগ করে চলে যান। ফলে আর কোনো মানুষই এখানে বাস করেন না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে এই বাড়িতে কে থাকেন? সেও এক ইতিহাস।
১৯৫০ সালে এলিরি হান্টিং অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এই বাড়িটি তৈরি হয়। ইউরোপ, আমেরিকার নানা দেশ থেকে মানুষ শিকারের উদ্দেশ্যে যেতেন এলিরি দ্বীপে। তাঁদের থাকার জন্যই বাড়িটি তৈরি। যদিও বর্তমানে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের কারণে আর শিকারের অনুমতি পাওয়া যায় না। ফলে বাড়িটিও পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। তবে আজও তার মালিকানা এলিরি হান্টিং অ্যাসোসিয়েশনের। চাইলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সহজেই এখানে কয়েক রাত থাকার অনুমতি পাওয়া যেতে পারে। এমন একটা বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে আসা সত্যিই রোমাঞ্চকর।
Powered by Froala Editor