গোপনীয়তা নীতি এবং ব্যবহারের শর্তবলি নিয়ে কিছুদিন আগেই বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছিল হোয়াটসঅ্যাপ। আর তা নিয়েই বিতর্কে জড়িয়েছিল গোটা বিশ্ব। ব্যবহারকারীদের একটি বড়ো অংশই সরব হয়ে উঠেছিলেন এই টেক্সটিং অ্যাপ্লিকেশনের বিরুদ্ধে। তবে বাস্তবে তার প্রভাব ঠিক কতটা পড়ছে সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ ধারণা ছিল না কারোর। এবার প্রকাশ্যে এল সেই তথ্যই। যা চমকে যাওয়ার মতোই।
প্রথম থেকেই হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসাবে উঠে আসছিল অন্য দুটি অ্যাপ্লিকেশনের কথা। টেলিগ্রাম ও সিগনাল। তবে টেলিগ্রামের পাল্লাই বেশ খানিকটা ভারী বর্তমানে, তেমনটাই স্পষ্ট হয়ে উঠছে সাম্প্রতিক ছবি দেখে। টেলিগ্রামের প্রতিষ্ঠাটা প্যাভেল দুরভ তাঁর ব্লগে সম্প্রতি প্রকাশ করেছেন এই তথ্য। প্যাভেল জানান, কেবলমাত্র গত ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই আড়াই কোটি ব্যবহারকারী বেড়েছে টেলিগ্রামে। যার ফলে মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটির বেশি।
তবে শুধু যে সাধারণ নাগরিকরাই এতে অংশ নিচ্ছেন, তেমনটা নয়। প্যাভেলের বিবৃতি থেকে জানা যায়, বিশ্বের তাবড় রাষ্ট্রনেতারাও হোয়াটসঅ্যাপ ছেড়ে বেছে নিয়েছেন এই প্ল্যাটফর্মকেই। সেই তালিকায় রয়েছে ব্রাজিল প্রেসিডেন্ট জের বলসোনারো, ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল, ইস্রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন, তুর্কি রাষ্ট্রপতি এরদোগানের মতো মুখ। ব্যক্তিগতভাবেই তাঁদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন উচ্ছ্বসিত টেলিগ্রাম-প্রতিষ্ঠাতা।
এর আগেও এমন ডিজিটাল পরিযায়ন লক্ষ করা গিয়েছিল ফেসবুক আসার সময়। অর্কুট কিংবা মাইস্পেস থেকে বহু ব্যবহারকারী সরে এসেছিলেন ফেসবুকে। তবে তার সংখ্যা ছিল নিতান্তই কম। প্রথমত তখন এত বহুলভাবে ইন্টারনেটের চল বাড়েনি সকলের মধ্যে। তাছাড়াও সেই পরিযায়নের পিছনে ছিল না বিতর্কিত কোনো প্রযুক্তিগত কারণ। হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টেলিগ্রামের এই ‘শিফট’-ই পৃথিবীর ইতিহাসে বৃহত্তম ডিজিটাল পরিযায়ন বলেই চিহ্নিত করছেন বিশেষজ্ঞরা। এবং একই সঙ্গে তা দ্রুততমও।
এই বিপুল পরিমাণ ব্যবহারকারী যে দিক পাল্টাবে একটি সিদ্ধান্তে তেমন কোনো ধারণাই ছিল না হোয়াটসঅ্যাপের। অন্যদিকে এই জন-প্লাবনের সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত ছিলেন টেলিগ্রাম বা সিগনালের নির্মাতারাও। আকস্মিক এই পরিবর্তন যেন এক ঝটকায় বদলে দিয়েছে গোটা প্রেক্ষাপটই...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দিন ফুরোচ্ছে হোয়াটসঅ্যাপের? জেনে নিন ‘সিগন্যাল’ এবং ‘টেলিগ্রাম’-এর ইতিহাস