বিজ্ঞানীদের তোলা বিস্ময়কর আলোকচিত্র, দেখুন মনোনীত ছবিগুলি

/১১

কথায় আছে, ‘ছবিও কথা বলে’। ফলত, ফটোগ্রাফিকে শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম ভাবলে, তা বেশ ভুলই হবে। বরং, আমাদের চারপাশে ঘটে চলা সমস্ত ঘটনারই সাক্ষ্যপ্রমাণ আলোকচিত্র। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ছবি বা ফটোগ্রাফও আসলে বিজ্ঞানীদের অন্যতম এক হাতিয়ার। এমনকি এক্স-রে’র ফটোগ্রাফ নোবেল এনে দিয়েছিল রন্টজেনকে। তবে ওয়াইল্ড লাইফ, নেচার কিংবা লাইফস্টাইলের মতো বৈজ্ঞানিক ফটোগ্রাফিরই বা আলাদা কোনো বিভাগ হবে না কেন?

/১১

তবে বিশেষ এমন কোনো ফটোগ্রাফির বিভাগ আজ থেকে বছর পঞ্চাশ আগেও ছিল না। তবে বিজ্ঞানে আলোকচিত্রের গুরুত্ব বাড়ার পর থেকেই ক্রমশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে সায়েন্টিফিক ফটোগ্রাফি। আর তা মূলত বিগত দুই দশকে। এই বিশেষ বিভাগকে কেন্দ্র করে চালু হয়েছে আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। নেপথ্যে বৈজ্ঞানিক সংগঠন ‘নিউ সায়েন্টিস্ট’। এবার তাঁরাই প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক ফটোগ্রাফি পুরস্কারের জন্য মনোনীত সেরা ছবিদের তালিকা। এক ঝলক দেখে নেওয়া যাক সেইসব অবাক করা দৃশ্যদের।

/১১

লোহার পাইপের মধ্যে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে রয়েছে বেশ কিছু সদ্যজাত ক্যাস্ট্রেল। উড়তে শেখেনি তারা এখনও। কিন্তু হঠাৎ লোহার পাইপের মধ্যে কেন বাসা বাঁধল ক্যাস্ট্রেল পাখিরা? গায়ের রং দেখলে খানিক জট খুলবে ধাঁধাঁর। তাদের বাদামি বর্ণ যে মিশে গেছে মরচে ধরা লোহার সঙ্গে। সন্তানদের শিকারি পাখিদের থেকে রক্ষা করার এও এক অদ্ভুত কৌশল। যুক্তরাজ্যের নর্থ ইয়র্কশায়ারের একটি শিল্পাঞ্চলে এই ছবিটি তুলেছিলেন ফটোগ্রাফার নিক ল্যাঙ্কাস্টার।

/১১

পড়ন্ত সূর্যের আলো পড়ে যেন আর মোহময়ী হয়ে উঠেছে সোনালি গমক্ষেত। তবে সৌন্দর্য নয়, বরং এই ছবির মূল আকর্ষণ অন্য জায়গায়। আস্ত এই গমক্ষেতকেই ক্যানভাসে পরিণত করেছেন কৃষকরা। গমের চারার বিন্যাসের মাধ্যমেই ফুটিয়ে তুলেছেন বায়োহ্যাজার্ডের প্রতীকী চিহ্ন। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহারে যে ক্রমশ বিষিয়ে উঠছে পৃথিবী, সেই বার্তাই দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের উইল্টশায়ারের কৃষকরা। ড্রোন ক্যামেরায় ছবিটি বন্দি করেন নাইজেল ফেরিস।

/১১

সাম্প্রতিক সময়ে ‘ঘোস্ট গিয়ার’ শব্দবন্ধটির সঙ্গে অল্পবিস্তর পরিচিত হয়েছি আমরা সকলেই। মাছ ধরার জাল এবং অন্যান্য প্লাস্টিকের সরঞ্জামের অনেক সময়ই ট্রলার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যায় সমুদ্রে। কখনও আবার ইচ্ছাকৃতভাবেই বর্জ্য হিসাবে নিক্ষেপ করা হয় তাদের। এই ঘোস্ট গিয়ারের দৌরাত্ম্যেই রীতিমতো অতিষ্ঠ সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্র। ফিলিপাইন্সে সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে সেই ভয়াবহ বাস্তবের ছবিই তুলে এনেছিলেন ফটোগ্রাফার জ্যাক পোকোজ। যেখানে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে ঘোস্ট গিয়ারের জালে ফেঁসে রয়েছে প্রবাল প্রাচীরের একাংশ ছাড়াও বিভিন্ন সামুদ্রিক জীব।

/১১

দ্রুতগতিতে ইট, কাঠ আর কংক্রিটের মোড়কে ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ। অস্তিত্ব মুছে যাচ্ছে অরণ্যের। আর আমাদের সাজানো এই সভ্যতার জন্য বাস্তুচ্যুত হাজার হাজার প্রজাতি। তার মধ্যে অন্যতম হল মৌমাছি। যাদের অনুপস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে উদ্ভিদের বংশবিস্তারের পথটাই। গুরুত্বপূর্ণ এই পলিনেটরদের বাঁচাতেই সম্প্রতি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে লন্ডনে। বহুতলের মধ্যেও পৃথকভাবে জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে মৌমাছিদের। একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদনের জন্য সেই ছবিই ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন ফটোগ্রাফার আলেকজান্ডার টার্নার।

/১১

টেবিলে বসে রয়েছেন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি। সামনে রাখা জন্মদিনের কেক। জ্বলছে মোমবাতিও। কিন্তু উপস্থিত অতিথিরা সকলেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন রাস্তায়। কাচের জানলার বাইরে থেকেই তাঁরা অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন বৃদ্ধকে। আইরিশ ফটোগ্রাফার কিইরান ডোহার্থি এই ছবি তুলেছিলেন খোদ নিজের বাড়িতেই। আর ছবির কেন্দ্রবিন্দুতে যে বৃদ্ধ, তিনি স্বয়ং ডোহার্থির বাবা। করোনা মহামারীর আবহে বদলে যাওয়া সভ্যতার চেহারার খণ্ডচিত্রকে এভাবেই ধরেছেন তিনি।

/১১

দেওয়ালের ওপরে গজিয়ে উঠেছে স্লাইম মল্ড ছত্রাক। তবে মানুষের কাছে যা আগাছা, তাই মহার্ঘ্য অন্যান্য প্রজাতির কাছে। ব্যারি ওয়েবের তোলা যুক্তরাজ্যের বাকিংহামশায়ারের এই ছবিই তার প্রমাণ। ছবিতে ধরা পড়েছে এই ছত্রাকের ওপরেই অনায়াসে ভুঁড়িভোজ চালাচ্ছে উডলাউস পতঙ্গ। তবে ছবির বিশেষত্ব হল, পৃথক পৃথকভাবে তোলা সবমিলিয়ে ১৯টি ছবিকে সাজিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মূল ছবিটি।

/১১

পতঙ্গরা যে প্রকৃতির অন্যতম পলিনেটর বা পরাগসংযোগকারী প্রাণী, তা আমরা সকলেই জানি ছোটো থেকেই। কিন্তু কীভাবে হয় এই পরাগ সংযোগ? ফটোগ্রাফার মার্টিন ব্রাজিলের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই দৃশ্য। সাফোল্কের হেমেরোক্যালিস ফুলের বাগিচায় ছবিটি সংগ্রহ করেন মার্টিন। একদম কাছ থেকে নেওয়া এইচডি ছবিটিতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, হোভারফ্লাইয়ের মুখে এবং পায়ের রোমে আটকে রয়েছে হলুদ পরাগ।

১০/১১

অজানার প্রতি, অদেখার প্রতি যেমন চির-কৌতূহলী মানুষ, তেমন অন্যান্য প্রাণীদেরও কৌতূহল খুব একটা কম নয়। ডরসেটের নিকটবর্তী চেসিল কোভ অঞ্চলে সামুদ্রের তলদেশের বাস্তুতন্ত্রের ছবি তুলতে হাজির হয়েছিলেন ফটোগ্রাফার জর্জ বুল। প্রাথমিকভাবে একটি ঝিনুকের ওপরেই টর্চের আলো ফেলেছিলেন জর্জ। তবে সেই আলোর উৎস দেখতেই অন্ধকার আস্তানা থেকে বেরিয়ে উঁকি দেয় ছোট্ট একটি ব্লেনি ফিশ। জর্জের ক্যামেরায় সেই দৃশ্যই অপার্থিব চেহারা নিয়েছে।

১১/১১

স্ট্যান্ডে দাঁড় করানো মোবাইল ফোনে স্ক্রিনে জ্বল জ্বল করছে এক মহিলার ছবি। আর সেই ফোনের ওপরেই বসে রয়েছে একটি রবিন পাখি। ব্যাপার কী? ফোনের স্ক্রিনের ওই মহিলা স্বয়ং ফটোগ্রাফার কেট ম্যাকরে। লকডাউনে গৃহবন্দি থাকার সময়ই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে রবিন পাখিটির। ফোনে নিজের ছবি খুলে রেখে ম্যাকরে পরীক্ষা করে দেখেন পাখিটি তাঁকে আদৌ চিনতে পারে কিনা। আর তার পরের ঘটনা রীতিমতো অবাক করে দেয় স্বয়ং ফটোগ্রাফারকেও।

Powered by Froala Editor