বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ক্যালিফোর্নিয়ার সিকোয়া ন্যাশনাল পার্কে ব্যস্ততা তুঙ্গে। কয়েক সপ্তাহ ধরে জ্বলতে থাকা দাবানল (Forest Fire) একটু একটু করে এগিয়ে আসছে হাজার বছরের পুরনো এই বনভূমির দিকে। আর তাই গাছেদের রক্ষা করার জন্য তাদের অ্যালুমিনিয়ামের চাদরে ঢেকে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে বনবিভাগ। এই অরণ্যেই যে রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো গাছ জেনারেল শেরম্যান (General Sherman)। অন্তত ২ হাজার বছরের প্রাচীন এই গাছটির নিরাপত্তার বিষয়ে চিন্তিত সকলেই।
অনেকেই ভেবেছিলেন বৃহস্পতিবারই কোনো এক সময় সিকোয়া ন্যাশনাল পার্ক আগুনের কবলে চলে যাবে। তবে সৌভাগ্যের বিষয়, এখনও এখানে আগুন লাগেনি। কিন্তু দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাননি কেউই। আর সবচেয়ে বেশি চিন্তা জেনারেল শেরম্যানকে নিয়েই। অনুমান করা হয় ২৩০০-২৭০০ বছর ধরে এই গাছ টিকে রয়েছে। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আকারে ও আয়তনে বেড়েছে গাছটি। প্রায় ৮৩ মিটার উঁচু এই সিকোয়া প্রজাতির গাছটির কাণ্ডের মোট আয়তন প্রায় ১৪৮৭ কিউবিক মিটার। আয়তনে পৃথিবীর অন্য কোনো গাছ তার ধারে-কাছে নেই। এমন একটা গাছ আগুনে নষ্ট হলে পার্কের ঐতিহ্যে যেমন আঘাত লাগবে, তেমনই বাস্তুতন্ত্রেরও যথেষ্ট ক্ষতি হবে।
তবে সিকোয়া প্রজাতির গাছেদের আগুন প্রতিরোধের ক্ষমতা যথেষ্ট বেশি। এমনিতেই ক্যালিফোর্নিয়ার এই অঞ্চলটিতে দাবানল কোনো নতুন বিষয় নয়। চলতি বছরেই অন্তত ৭৪০০টি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে ক্যালিফোর্নিয়া জুড়ে। আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে প্রায় ২.২ মিলিয়ন একর বনভূমি। তবে সিকোয়া অরণ্যের কোনো গাছের এখনও কোনো ক্ষতি হয়নি। আমেরিকার বনবিভাগের মতে যদিও আগের কোনো দাবানলই এখনকার মতো তীব্র ছিল না। প্রায় ১০০ বছর আগে উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া অঞ্চলে এমন ভয়াবহ আগুন লেগেছিল। তারপর জানা ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দাবানল। আর তাই এবারে নিরাপত্তার বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেই হবে। জেনারেল শেরম্যান ছাড়াও আরও প্রায় ২৫০টি গাছকে ঢেকে ফেলা হয়েছে অ্যালুমিনিয়ামের চাদরে। বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরে কাজ করেছে অন্তত ৩৫০টি হেলিকপ্টার। এখনও অবধি আগুন যথেষ্ট দূরেই রয়েছে। তবুও বনবিভাগের সতর্ক দৃষ্টি সবসময় রয়েছে জেনারেল শেরম্যানের উপরে।
Powered by Froala Editor