এক সময় যা ছিল ধূসর রঙের বিশাল আবর্জনার পাহাড়, এখন তার চেহারাই সবুজ। নিউইয়র্ক শহরের আধিকারিকরা এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সৌজন্যে বিশ্বের বৃহত্তম আবর্জনার পাহাড় ‘ফ্রেসকিলস’ সেন্ট্রাল পার্কের থেকেও তিনগুণ বড়ো তৃণভূমিতে পরিণত হয়েছে। আর কয়েক মাসের মধ্যে সাধারণের জন্য খুলে যাবে এই পার্ক। পশ্চিম গোলার্ধের জনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে মানুষ পাবে দিগন্তহীন সবুজের আধিক্য।
তবে সহজ ছিল না কাজটা। ২০০১ সালে নিউইয়র্কের মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেন্ট্রাল পার্কের মতোই আরও একটি পার্ক গড়ে তোলার। আর ঠিক তার পরপরই তিনি আইনত সেখানে আবর্জনা ফেলা বন্ধ করেন। শুরু হয় পাঁচ দশকের পুরনো এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের প্রকিয়াকরণের কাজ।
প্রথমে আয়রন সমৃদ্ধ মাটি স্তর বানানো হয় আবর্জনার ওপরে। মাটির তলায় তৈরি হওয়া মিথেনের জন্য ব্যবস্থা করা হয় পাইপলাইনের। যা বর্তমানে জ্বালানির সরবরাহ করছে স্ট্যাটেন দ্বীপপুঞ্জের মানুষদের। আবর্জনার পাহাড় থেকে নোংরা জল অপসারণের জন্য তৈরি করা হয় কংক্রিট নালাও। ধীরে ধীরেই সেখানে জন্মাতে থাকে বিভিন্ন প্রজাতির ঘাস। ২০১২ সালে সরকারি প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করে অঞ্চলটিকে ছাগলের বিচরণ ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তোলা হয়। ফলে তাতে জৈব ভারসাম্যও ফিরে আসে সমগ্র অঞ্চলটির।
তবে ২২০০ একরের এই বিশাল আবর্জনাক্ষেত্র যে তার স্বাস্থ্য ফিরে পাচ্ছে তার আভাস মিলেছিল বিভিন্ন প্রজাতির মধ্য-আটলান্টিক পাখিদের ফিরে আসার মাধ্যমেই। এখন শুধু মানুষের জন্য খোলার অপেক্ষা। তবে সামনের বসন্তে এই পার্ক খুললেও তা মাত্র ২১ একর জমি ব্যবহৃত হবে পার্ক হিসাবে। বাকি অঞ্চলটি পুনরুদ্ধারের কাজ শেষ হতে হতে সময় লাগবে আরও দেড় দশক। ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে পার্কের আয়তন।
আরও পড়ুন
রেলট্র্যাক ছাড়াই চলবে টয়ট্রেন, বিশেষ পরিষেবা উত্তরবঙ্গের তিনটি পার্কে
তবে ১৫০০ কোটি টনের আবর্জনার প্রক্রিয়াকরণ যে এভাবেও সম্ভব হতে পারে, সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে এক প্রকার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল নিউইয়র্ক। জলাভূমি, তৃণভূমি এবং বোটিংয়ের সুবিধা সবকিছুই হাতের মুঠোয় পাবে নিউইয়র্কবাসী। পাবে অবাধ প্রান্তরকে। সেই অনুভূতির অপেক্ষাতেই লকডাউন উঠে যাওয়ার প্রতীক্ষা করছেন তাঁরা...
আরও পড়ুন
অরণ্যের মধ্যেই আস্ত নদী, পূর্ণতা পেল জিয়ন ন্যাশনাল পার্ক
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সিঙ্গাপুরের পার্কে নজরদারি রোবট-কুকুরের, শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে উদ্যোগ