কাগজহীন প্রশাসনিক ব্যবস্থা দুবাইয়ে, বিশ্বে প্রথম

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা পুরনো অভ্যাসকেই পিছনে ফেলে এসেছি আমরা। এখন আর পকেটে নোটপ্যাড বা পেন নিয়ে ঘুরতে হয় না। ক্যাশ টাকা রাখারও প্রয়োজন পড়ে না বিশেষ। সবটাই চলে ডিজিটাল মাধ্যমে। ক্রমশ সম্পূর্ণ কাগজহীন (Paperless) হওয়ার দিকেই যেন এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। আর এর মধ্যেই বিশ্বের প্রথম কাগজহীন দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে আরব আমিরশাহী। ইতিমধ্যে সমস্ত সরকারি কাজে কাগজহীন প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে দুবাই (Dubai) সরকার। সোমবার এমনটাই ঘোষণা করলেন দুবাই শহরের যুবরাজ শেখ হামদান বিন মহম্মদ বিন রশিদ আল মকতুম। সরকারি কাজের পাশাপাশি এবার সমস্ত বেসরকারি ক্ষেত্রেও কাগজহীন প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

পশ্চিমের দেশগুলিতে অনেক আগেই কাগজহীন প্রশাসনিক ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছেন অনেকে। বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপ এবং আমেরিকার নানা দেশে বেশ কিছু সরকারি ব্যবস্থায় ডিজিটাল টেকনোলজির ব্যবহার শুরু হয়েছে। এমনকি ভারত বা বাংলাদেশের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশেও ডিজিটাল প্রযুক্তির বহুল ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে ডিজিটাল প্রযুক্তির অধিক ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করেছেন অনেকেই। কারণ এই ব্যবস্থায় তথ্যের সুরক্ষা প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে। কাগজের নথি সুরক্ষিত রাখা যতটা সহজ, ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষিত রাখা তার চেয়ে অনেক কঠিন। তবে ক্রমশ গোটা পৃথিবী যে একদিন ডিজিটাল দুনিয়ার দিকেই এগিয়ে যাবে, তাতে সন্দেহ ছিল না কারোরই।

সেই যাত্রায় এবার সবার সামনে এগিয়ে গেল দুবাই শহর। যদিও এক্ষেত্রেও তথ্যের সুরক্ষার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে। দুবাইয়ের যুবরাজ এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থার ফলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থনৈতিক লাভ হবে। ডিজিটাল ব্যবস্থায় বছরে অন্তত ৩৫০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় করতে পারবে দুবাই প্রশাসন। পাশাপাশি মানবসম্পদের অপচয়ও কমবে। বছরে অন্তত ১৪ মিলিয়ন ম্যান-আওয়ার সম্পদের সাশ্রয় হবে। অর্থাৎ ১৪ মিলিয়ন সরকারি কর্মচারীর ১ ঘণ্টার কাজ কমে যাবে। আধুনিক সময়ে দাঁড়িয়ে দুবাই সরকারের এই পরিকল্পনা সফল হলে পৃথিবীর অন্যান্য দেশও যে ক্রমশ কাগজহীন পদ্ধতির দিকে এগিয়ে যাবে, সে-কথা বলাই বাহুল্য।

Powered by Froala Editor

More From Author See More