বিশ্ব শান্তি দিবসে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা জাতিপুঞ্জের, সমর্থনে প্রতিটি সদস্য দেশ

একদিকে আফগানিস্তানে তালিবানি শাসনের জেরে বিক্ষুব্ধ পরিবেশ, অন্যদিকে ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ এখনও বন্ধ হয়নি। মায়ানমারের মাটিতেও গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের লড়াই চলছে। ঠিক এমনই সময় আজ সকাল থেকে হঠাৎই শান্ত পরিবেশ। পৃথিবীর সমস্ত দেশের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আজ তাদের অস্ত্রবিরতির (Cease-fire) দিন। কিন্তু কেন এভাবে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করল সবাই? কারণ আজ বিশ্ব শান্তি দিবস (World Peace Day)। আর এই দিনটাকে সামনে রেখেই এবছর জাতিপুঞ্জ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, পৃথিবীর কোনো দেশে আজ কোনো সামরিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে দেওয়া যাবে না। জাতিপুঞ্জের সদস্য প্রতিটি দেশ এই সিদ্ধান্তে সমর্থনও জানিয়েছে।

১৯৮১ সালে বিশ্ব শান্তির উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রতি বছর একটি দিন স্থির করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতিপুঞ্জ। প্রথমে ঠিক হয়, দিনটি হবে প্রত্যেক সেপ্টেম্বর মাসের তৃতীয় অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ব শান্তি দিবস। এই দিনই জাতিপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশন শুরু হত। কাজেই শান্তির বার্তাকে সামনে রেখে প্রতি বছরের অধিবেশন শুরু করাই ছিল উদ্দেশ্য। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতি বছর দিনটি উদযাপিত হলেও প্রায় ২০ বছর জনমানসে তার বিশেষ কোনো প্রভাব ছিল না। ২০০১ সালে নিউ ইয়র্ক শহরে হামলার পরই দিনটির তাৎপর্য নতুন করে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয় জাতিপুঞ্জ। আর তখনই আরও নির্দিষ্টভাবে ২১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়। ২০০২ সাল থেকে ২১ সেপ্টেম্বর দিনটিই বিশ্ব শান্তি দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।

বর্তমান বছরটিকে নানা দিক থেকে ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে জাতিপুঞ্জ। করোনা অতিমারীর মধ্যেই নানা দেশে শুরু হয়ে গিয়েছে সামরিক অভ্যুত্থান। শুধু তাই নয়, ধর্মীয় এবং জাতিহিংসার ঘটনাও ক্রমশ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আর অতিমারী পরিস্থিতি এইসমস্ত ঘটনাকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। একমাত্র মানুষে মানুষে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই পারে সমস্যার সমাধান করতে। সামরিক অস্ত্রবিরতির পাশাপাশি সেই সহাবস্থানের বার্তা প্রচারকেই গুরুত্ব দিতে চাইছে জাতিপুঞ্জ। আর এই উপদ্রুত পরিস্থিতিতেও যে প্রতিটা দেশ সেই উদ্দেশ্যকে সমর্থন জানিয়েছে, এও এক ঐতিহাসিক ঘটনা। তবে শান্তি দিবস যেন এই একটি দিনেই আটকে না থাকে। বছরের প্রতিটা দিন হয়ে উঠুক শান্তির দিন। জুড়ে জুড়ে থাকার এই আহ্বানই বাস্তব রূপ পাক। আজকের দিনে এটুকুই চাহিদা।

Powered by Froala Editor