দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম, ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পৃথিবী

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ যেমন অগণিত মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল, তেমনই বিশ্বযুদ্ধের কারণে ধ্বসে পড়েছিল গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। দারিদ্র পৌঁছেছিল চরমে। এবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর আর্থিক পরিস্থিতিকেও ছাপিয়ে গেল বর্তমান অবস্থা। সম্প্রতি, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (World Economic Forum) বার্ষিক সম্মেলনে উঠে এল এমনই তথ্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড়ো অর্থনৈতিক সংকটের (Economic Challenge) সম্মুখীন হয়নি পৃথিবী, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। 

২০২০ সালে পৃথিবীজুড়ে থাবা বসিয়েছিল করোনাভাইরাস। কম-বেশি সমস্ত দেশই হেঁটেছিল লকডাউনের পথে। ফলে কমেছিল উৎপাদনের পরিমাণ। অন্যদিকে ক্রমাগত খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে ক্রমে। বৃদ্ধি পেয়েছে সামগ্রিকক অর্থমূল্যও। এই সবকিছুই ২০২০ সাল থেকে অস্থির ও বিশৃঙ্খল করে তুলেছিল বৈশ্বিক বাজারকে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনও নানাভাবে কোপ বসিয়েছে বিশ্বজুড়ে। প্রভাবিত করছে উৎপাদন ব্যবস্থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এই পরিস্থিতিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক তহবিলের বিবৃতি অনুযায়ী, বর্তমানে মহামারীর প্রকোপ অনেকটা কম থাকায়, এটাই ছিল অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের উপযুক্ত সময়। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বেড়েই চলেছে ক্রমশ। যা মুদ্রাস্ফীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা বিশ্বের কাছেই। তাছাড়াও আফগানিস্তান, মায়ানমার, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কিছু দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতিও ভেঙে দিচ্ছে গোটা অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড।

আন্তর্জাতিক সংস্থাটির পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে নতুন করে দারিদ্রসীমার নিচে চলে গেছেন ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ। যা আগামী বছর দুয়েকের মধ্যেই পৌঁছাতে পারে ৫০ কোটির কাছাকাছি। চরম দুর্ভিক্ষের শিকার হতে পারে একাধিক দেশ। অন্যদিকে জি-৭ দেশগুলির গড় আয় কমেছে ০.১ শতাংশ। ফলে পরবর্তীতে কালে তাদের থেকে প্রাপ্ত সাহায্যের পরিমাণও কমতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন আইএমএফ পরিচালক ক্রিস্টালিনা জরজিভা। 

আরও পড়ুন
প্রবীণ নাগরিকদের নিয়ে অর্থনীতি-বিষয়ক রিপোর্ট, ভারতের ইতিহাসে প্রথম

প্রশ্ন থেকে যায়, এই সংকট কাটবে কীভাবে? আইএফএফ-এর দাবি, বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সহিংসতাকে নিয়ন্ত্রণে আনা কোনো সংস্থার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করার জন্য প্রতিটি দেশের কাছেই যথেষ্ট বিকল্প রয়েছে। তাছাড়াও প্রাথমিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনকে ঠেকাতে পারলে, অনেকটাই নিশ্চিত করা যাবে ভবিষ্যৎ। এখন দেখার, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কতটা সচেতন পদক্ষেপ নেন ক্ষমতাশালী রাষ্ট্রনেতারা…

আরও পড়ুন
মহামারীর মধ্যেও ঘুরে দাঁড়াল মার্কিন অর্থনীতি

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
বিশ্বের অর্থনীতি বদলে দিতে পারে সাইকিডেলিক মাশরুম!

More From Author See More