সোশ্যাল মিডিয়ায় যৌন নিগ্রহের শিকার অধিকাংশ মহিলাই, জানাচ্ছে সমীক্ষা

রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া কোনো যুবতীর দিকে অশ্লীল ইঙ্গিত ছুঁড়ে দিচ্ছে একদল যুবক। অথবা খোলা রাস্তায় ধর্ষণের হুমকি দিচ্ছে কেউ। এসব দৃশ্য আজও দেখা যায়। তবে আগের থেকে সংখ্যায় অনেকটাই কমেছে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে মহিলারা এখন আগের থেকে নিরাপদ। বরং তার বিপরীত ছবিই উঠে আসছে বারবার। সম্প্রতি ন্যাশানাল ক্রাইম রকর্ড ব্যুরোর তথ্যেও দেখা গিয়েছে প্রতি বছর একটু একটু করে বেড়ে চলেছে মহিলাদের প্রতি হিংসার ঘটনা। তবে তার চরিত্রে বদল এসেছে। আর সেই বদলে যাওয়া চরিত্রই উঠে এল আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশানাল’-এর সমীক্ষায়। দেখা গিয়েছে ভারতের মতো দেশে যৌন নিগ্রহের বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এমনকি ধর্ষণ অথবা খুনের হুমকিও বিরল নয়।

ভারত, নাইজেরিয়া, ব্রাজিল, আমেরিকা সহ মোট ২২টি দেশের সামাজিক মাধ্যমে মহিলাদের অভিজ্ঞতার উপরে নির্ভর করে সমীক্ষা চালায় ‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশানাল’। তাতে দেখা গিয়েছে, ভারতে যত মহিলা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করেন, তার মধ্যে ৫৮ শতাংশের অভিজ্ঞতাই একইরকম। তাঁরা কোনো না কোনোভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। এমনকি অনেকে এই ধরনের অভিজ্ঞতার কারণে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করা বন্ধও করে দিয়েছেন। প্রতি বছর অন্তত ১০ শতাংশ মহিলা এভাবে সামাজিক মাধ্যম থেকে সরে যান বলে জানাচ্ছে সমীক্ষার রিপোর্ট। তবে বর্তমান সময়ে এইভাবে সরে যাওয়া কোনো সমাধান যে হতে পারে না, সেকথা বলাই বাহুল্য।

সমীক্ষায় আরও দেখা গিয়েছে, যৌন নির্যাতনের বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাধ্যম ফেসবুক। ফেসবুক ব্যবহারকারী মহিলাদের ১৯ শতাংশই ধর্ষণ অথবা খুনের হুমকির শিকার। হোয়াটসঅ্যাপের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা বিরল নয়। এমনকি ইনস্টাগ্রাম বা টিকটকের মতো মাধ্যমেও এই ঘটনা ঘটে থাকে প্রায়ই। দীর্ঘদিন ধরেই নারী সুরক্ষা সংগঠনগুলি এবিষয়ে সামাজিক মাধ্যমের কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন। একাধিক পিটিশন পাঠানো হয়েছে তাঁদের কাছে। আর সাম্প্রতিক সমীক্ষা সেই জ্বলন্ত সমস্যাকেই তুলে ধরল সংখ্যার হিসাবে।

Powered by Froala Editor