একটি-দুটি নয়। ৪৭ সন্তানের জনক তিনি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ভূমিষ্ঠ হবে আরও ১০টি সন্তান। এমন ব্যক্তির মুখে ‘মহিলারা পাত্তা দেন না’-র মতো অভিযোগ শুনলে অবাক হতেই হয়। তবে বাস্তবেই ঘটল এমনটা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবেই আক্ষেপ প্রকাশ করলেন ৩০ বছর বয়সি মার্কিন যুবক। স্বাভাবিকভাবেই তাঁর এই বক্তব্য রীতিমতো সাড়া ফেলে দেয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। এও কি সম্ভব?
হ্যাঁ, সম্ভব। সবটা খুলেই বলা যাক তবে। ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা কাইলে গর্ডি (Kyle Gordi) আদতে একজন স্পার্ম ডোনার বা শুক্রাণুদাতা (Sperm Donor)। তবে আশ্চর্যের বিষয় হল, অর্থের জন্য এই পথে আসেননি তিনি। এই কাজটিকে সমাজসেবা হিসাবে দেখতেই পছন্দ করেন গর্ডি। আজ থেকে বছর আটেক আগের কথা। নিঃসন্তান দম্পতির মুখে হাসির রেখা ফুটিয়ে তুলতেই স্বেচ্ছাসেবী শুক্রাণুদাতার ভূমিকায় নেমেছিলেন কাইলে। বছর দুয়েকের মধ্যেই রীতিমতো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। আমেরিকার অন্যান্য প্রদেশ তো বটেই, এমনকি ব্রিটেন, কানাডা, ইতালি থেকেও বহু মানুষ যোগাযোগ করেছেন তাঁর সঙ্গে। সব মিলিয়ে প্রায় হাজারেরও বেশি মহিলা এখনও অপেক্ষারত তাঁর দরজায়।
তবে এই পরিষেবাই যে কাল হয়ে দাঁড়াবে তাঁর, তা কি আর জানতেন কাইলে? এই পরিষেবা শুরু করার কথা নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন তিনি। আর তারপর থেকেই তাঁকে অবহেলার শিকার হতে হয় ব্যক্তিগত জীবনে। প্রেম তো দূরের কথা, তাঁর এই কাজের জন্য মহিলারা রীতিমতো এড়িয়ে চলেন তাঁকে। ৪৭ সন্তানের বায়োলজিক্যাল বাবা হওয়ার কারণে কথা বলতে চান না তাঁর সঙ্গে।
৩০-এর কোঠায় দাঁড়িয়ে এই নারীসঙ্গের অভাব যেন ক্রমশ চেপে বসছে তাঁর জীবনে। বহু মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেও যেন অভিশাপ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাঁকে। সম্প্রতি বেশ আক্ষেপের সঙ্গেই এই কথা জানান কাইলে। এবার সংসার পাততে রীতিমতো আগ্রহী তিনি। তবে জীবনসঙ্গীর কাছে তিনি লুকাতে চাননা কিছুই। স্বচ্ছতাই সম্পর্কের ভিত্তিপ্রস্তর, এমন বিশ্বাস তাঁর।
বর্তমানে বিশ্বসফরে বেরিয়েছেন কাইলে। নানান দেশে ছড়িয়ে থাকা সন্তানদের সঙ্গে দেখা করাই মূল উদ্দেশ্য তাঁর। এই সফরেই নিজের মনের মানুষকে খুঁজে পেয়ে গেলে, নিঃসন্দেহে তা কাইলের জীবনের অন্যতম রোমাঞ্চকর অধ্যায় হয়ে থাকবে…
Powered by Froala Editor