এই মুহূর্তে করোনা ভাইরাস নিয়ে গোটা বিশ্ব তটস্থ। ভারতেও প্রতিদিন বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। গোটা দেশ প্রায় ঘরবন্দি দশা কাটাচ্ছে বিগত বেশ কিছুদিন ধরে। তবুও নিয়মের পালন হচ্ছে না। এমন অবস্থায় পরবর্তী তিন-চার সপ্তাহ দেশের প্রতিটি মানুষ, প্রশাসনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনটাই বলা হচ্ছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি মহল থেকে।
৩০ জানুয়ারি ভারতে প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছিল। তারপর থেকে আজ অবধি সেই সংখ্যাটা বেড়ে প্রায় ১০ হাজার। ইতিমধ্যেই ৩৩১ জন মারা গেছেন। এই প্রতিবেদন যখন প্রকাশিত হবে, ততক্ষণে এই দুটো অঙ্কই বদলে যাবে। এমন অবস্থায়, গোটা দেশেই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। লকডাউন জারি আছে। স্কুল কলেজও বন্ধ। জাতীয়, আন্তর্জাতিক— সমস্ত সংস্থা তাকিয়ে আছে ভারতের দিকে। এমন অবস্থায় কেন্দ্রের তরফ থেকে আগামী তিন-চার সপ্তাহকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ভারত এই কটাদিন কীভাবে লড়াই করে করোনার বিরুদ্ধে, সেই দিকেই তাকিয়ে সবাই।
কিন্তু তিন-চার সপ্তাহকে এত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন? প্রথমত নতুন করে লকডাউন জারি হয়েছে। আর টেস্টকিট থেকে আরম্ভ করে যাবতীয় যা কিছু সব পুরোদমে আসতে আরম্ভ করেছে। হাইড্রক্সি ক্লোরোকুইনো তৈরি হচ্ছে সমানে। এমনকি, ভারতের কাজ প্রশংসাও পাচ্ছে। কিন্তু এখনও আক্রান্তের হার বেশি। তার ওপর চিকিৎসকরাও করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই মুহূর্তে প্রতিটা মুহূর্ত সতর্ক থাকলে, ভয়ংকর বিপদ আসার আগেই একে থামানো যাবে। নাগরিকদের বারবার বলা হচ্ছে যাতে লকডাউন মানা হয়। কিন্তু সব জায়গায় তা মানা হচ্ছে কিনা ঠিকমতো, সন্দেহ থেকে যাচ্ছে তা নিয়েও…
এই অবস্থায় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, যদি লকডাউন জারি না হত, তাহলে এতদিনে ১০ লাখের কাছাকাছি আক্রান্তের সংখ্যা হয়ে যেত। এত বিপুল জনসংখ্যার দেশে সেই অবস্থাকে সামাল দিতে পারাটা প্রশংসার উল্লেখ রাখে। প্লাজমা ট্রিটমেন্টও বেশ কিছু জায়গায় শুরু হয়েছে। সেইসঙ্গে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আরও যাতে বাড়ানো হয়, সেটাই লক্ষ্য। সব মিলিয়ে, আগামী কটাদিন যদি ঠিকভাবে চলা যায়, তাহলে আশা করা যাচ্ছে এর প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। সমস্তটা নির্ভর করছে আমাদের ওপর। এই তিন-চার সপ্তাহেও যদি না কমে, তাহলে সমূহ বিপদ। কাজেই, ভারত যে অদ্ভুত ‘সন্ধিক্ষণে’ দাঁড়িয়ে আছে, তা বলাই যায়।