যতই ঔপনিবেশিক সংস্কৃতিকে আপন করে নেওয়ার অভিযোগ উঠুক, বাঙালি কিন্তু আজও শৌচকর্মের বদলে টিস্যু পেপার ব্যবহার করতে শেখেনি। বরং নিজেদের আভিজাত্য বজায় রাখতে বাঙালি টয়লেটে নতুন আমদানি জেট ফ্ল্যাশ তবে শৌচালয়ে নিজেদের ঐতিহ্য যে বাঙালিরাই বজায় রেখেছে, তা কিন্তু নয়। সারা এশিয়াতেই টয়লেট পেপারের ব্যবহার প্রায় নগন্য। এমনকি এই নিয়ে এশিয়াবাসীর কাছে বেশ কিছু যুক্তিও আছে।
টিস্যু পেপার ব্যবহার প্রসঙ্গে এশিয়াবাসীর স্পষ্ট অভিযোগ, এতে পায়ুদেশে প্রদাহ বাড়ে। বিশেষকরে অর্শ এবং ভগন্দরের রোগীদের জন্য তো টিস্যু পেপার রীতিমতো যন্ত্রণাদায়ক। আর এশিয়াতে বহু মানুষ এই দুই রোগে আক্রান্ত। এমনকি ইউরিনারি গ্লান্ডেও সমস্যার অন্যতম কারণ টিস্যু পেপার, এমনটাই মনে করে এশিয়াবাসী।
কেউ কেউ তো আবার এর থেকেও উচ্চমার্গে চিন্তাভাবনা করেন। তাঁদের দাবি, গাছ কাটা কমাতেই টিস্যু পেপারের ব্যবহারও কমানো উচিৎ। অথবা, টিস্যু পেপার যথেষ্ট হাইজেনিক নয় বলেও মনে করেন অনেকে। যদিও ইউরোপীয়রা মূলত এশিয়ার সংস্কৃতিকেই টিস্যু পেপারের ব্যবহার কম হওয়ার পিছনে কারণ বলে মনে করেন। ইসলামিক সংস্কৃতিতে তো জল দিয়ে শৌচকর্ম না করলে নামাজ ওজু হয় না। টিস্যু পেপারের সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতিরও সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না।
তবে এত যুক্তির পরেও ইউরোপীয়রা কিন্তু টিস্যু পেপার ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিজেদের উন্নতই মনে করে। আর তাঁদের অন্তিম যুক্তি, এশিয়ার নিকাশি ব্যবস্থা ভালো নয় বলেই টিস্যু পেপারের ব্যবহার কম। এ বিতর্ক যেন রীতিমতো দুই ভূখণ্ডের শ্রেষ্ঠতার লড়াইতে পরিণত হয়েছে। বিজ্ঞানীরাও নেমে পড়েছেন গবেষনার কাজে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কোন পক্ষ শ্রেষ্ঠ প্রমাণিত হবে, জানেন না কেউই।
আরও পড়ুন
বছর পেরিয়েও সুস্থ অ্যানিমিয়া ও থ্যালাসেমিয়া রোগীরা, আশা জাগাচ্ছে ক্রিস্পার প্রযুক্তি
Powered by Froala Editor