৬০৪ বছর পর ইংল্যান্ডে ফিরল সাদা সারস, জন্ম নিল শাবক

শুধুই ইংল্যান্ড নয়, ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশের রূপকথার সঙ্গে জড়িয়ে আছে সাদা সারসের গল্প। সাদা রঙের শরীর এবং কালো বর্ডার দেওয়া প্রায় ৭ ফুটের দুটি ডানা নিয়ে গোলাপি পায়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকে এরা। বেশি উঁচুতে উঠতে পারে না, তবে অনেক দূর পর্যন্ত উড়ে যায়। শীতকাল নামলে তারা একেক সময় আফ্রিকার দক্ষিণ পর্যন্ত পৌঁছে যায়, আবার গ্রীষ্মকালে ফিরে আসে। প্রতি বছর প্রায় ২০টি সাদা সারস ইংল্যান্ডেও প্রবেশ করে। কিন্তু তারা কেউই এখানে বাসা বাঁধে না। ৬০০ বছরের বেশি সময় ধরে ইংল্যান্ডে কোনো সারসের প্রজনন ঘটেনি।

তবে এই ২০২০ সালে অনেক দুঃসংবাদের সঙ্গেই আছে প্রকৃতির জন্য অনেকগুলো সুখবর। তারই একটি খবর আসছে ইংল্যান্ডের দক্ষিণে পশ্চিম সাসেক্স অঞ্চল থেকে। গত ৬ মে নেপ এস্টেটের দুটি ওক গাছের মাথায় নতুন শিশুর জন্ম দিয়েছে একটি সারস দম্পতি। একইদিনে তিনটি ডিম থেকে সন্তানের জন্ম দিয়েছে তারা। আর এই ঘটনায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন ইংল্যান্ডের রি-ইন্ট্রোডাকশন প্রকল্পের বিজ্ঞানীরাও।

২০১৬ সাল থেকে ইংল্যান্ড সহ ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে শুরু হয়েছে এই রি-ইন্ট্রোডাকশন প্রকল্প। মানুষের উপদ্রবে যেসব প্রাণী বিদায় নিয়েছে, তাদেরই আবার ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা। আর তার অংশ হিসাবেই নেওয়া হয়েছে এই সাদা সারস প্রকল্প। আর এখানে বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের মাটিতে অন্তত ৫০টি সারস শাবকের জন্ম দেওয়া।

তবে নেপ এস্টেটের ৬ মের ঘটনাতেই শেষ হয়ে যায়নি সারসের প্রজনন। দুই সপ্তাহের মধ্যেই পশ্চিম সাসেক্স অঞ্চলেই আরও একটি সারস দম্পতি তিনটি সন্তানের জন্ম দেয়। আর এই জোড়া ঘটনায় ইংল্যান্ডের বাস্তুতন্ত্রও খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে চলেছে। ১৯৭০ সাল থেকেই পৃথিবীতে সবথেকে বেশি বৈচিত্র্য হারানো দেশগুলির মধ্যে অন্যতম ইংল্যান্ড। আর ৬০৪ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সাদা সারস শুধু যে নিজেদের সংখ্যা বৃদ্ধি করবে তাই নয়, সেইসঙ্গে আরও অনেক ছোট প্রাণীর সংখ্যাও বাড়িয়ে তুলবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। আর করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন না হলে এই উদ্যোগ এত তাড়াতাড়ি সফল হত না বলেই দাবি করেছেন তাঁরা।

Powered by Froala Editor