ইতিহাসের সঙ্গে যেমন অজানা অনেক তথ্য থাকে, তেমনই থাকে নানা রহস্য। বিশেষ করে সেই ইতিহাসের কোনো লিখিত প্রমাণ যদি না থাকে, তাহলে তো সবটাই থেকে যায় অনুমানের উপর। মিশরের বিভিন্ন পিরামিডকে ঘিরেও আছে এমনই নানা রহস্য। সেই প্রাচীন কালে এই বিরাট বিরাট স্থাপত্য কীভাবে তৈরি হতো, কোত্থেকেই বা সংগ্রহ করা হত এইসব পাথর, তার কোনো প্রমাণ নেই। পুরোটাই শুধু অনুমান। এই অনুমানের উপর ভিত্তি করেই লেখা হয় ইতিহাস।
মিশরের অন্যতম প্রাচীন পিরামিড হল সম্রাট কুফুর পিরামিড। আনুমানিক ২৫০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ এই পিরামিড নির্মীত হয়েছিল। তবে এই পিরামিডের গঠন অনেককেই অবাক করে। অন্যান্য পিরামিডের মতো এর চূড়াটি তীক্ষ্ম নয়। বরং দেখে মনে হয় মসৃণভাবে খানিকটা অংশ যেন কেটে নেওয়া হয়েছে। এই অদ্ভুত আকৃতির কারণ কী, সেকথা লেখা নেই কোথাও। অতএব এখানে কেবল অনুমান করা চলে। আর এভাবেই অসংখ্য কিংবদন্তি গড়ে উঠেছে এই পিরামিডকে ঘিরে। সেইসব কিংবদন্তি অনুসারে পিরামিডের মাথায় ছিল আরেকটি ছোটো পিরামিড। সেটা ছিল সোনার তৈরি। সূর্যের আলো পড়ে চকচক করত সেই অংশটি। প্রায় দুশো বছর ধরে এই বক্তব্যে বিশ্বাস করে এসেছেন বহু মানুষ। সেই সোনার অংশটির সন্ধানে চলেছে গবেষণাও। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি কিছুই।
মিশরের বিভিন্ন পিরামিডের মধ্যে রাজারা কিছু সংকেত রেখে যেতেন। সেইসব সংকেত উদ্ধার করা আজ রীতিমতো অসম্ভব। সম্রাট কুফু কি তেমনই কোনো সংকেত দিয়ে গিয়েছিলেন এই পিরামিডে? হয়তো সোনার অংশটির কোনো অস্তিত্বই ছিল না। হয়তো চুনাপাথরের তৈরি ছিল সেটি, কালক্রমে জলের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। অথবা হয়তো সত্যিই সোনার তৈরি ছিল ওই চূড়া। কেবল আজও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনই অনেক সম্ভবনা থেকে যায়। কোনটা সত্যি, সেকথা নিশ্চিতভাবে বলা মুস্কিল।