যশোর রোডের দুই ধারের শতবর্ষ প্রাচীন গাছ কাটা নিয়ে তরজা চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। এবার সেই ঘটনা নিয়েই একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, গাছ কোনোভাবেই কাটা যাবে না। তাদের বাঁচিয়ে কীভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করা যায়, সেটাই দেখবে এই বিশেষ কমিটি।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এস এ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। এই বিশেষ কমিটি তৈরি হবে পরিবেশবিদদের নিয়ে। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, উন্নয়ন প্রয়োজন; কিন্তু সেটা পরিবেশকে ধ্বংস করে নয়। তিনি এও জানিয়েছেন, ওই গাছগুলো যখন কাটা হচ্ছে, তখন একবার ভেবে দেখা উচিত পরিবেশের প্রতি তাদের অবদান সম্পর্কে। বহু বছর ধরে এই গাছগুলো যে পরিমাণ অক্সিজেনের জোগান দিচ্ছে, সেটা কিনতে গেলে আমাদের বিপুল খরচ হত। সুতরাং এই গাছগুলো না কেটে কীভাবে রাস্তা সম্প্রসারণ-সহ অন্যান্য কাজ করা যায়, সেটা দেখা উচিত। চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশবিদদের ওই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
যশোর রোড নিজে যেমন ঐতিহাসিক, তার চারপাশের গাছগুলিও তার বাইরে যায় না। ১৮৪৫ সালে যশোর রোড তৈরি শেষ হয়। সেই সময়ই যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য রাস্তার দুইধারে সার দিয়ে এই গাছগুলি লাগানো হয়। বহু বছর ধরে গাছগুলি এখানকার গর্ব। যশোর রোড সম্প্রসারণ, এবং পাঁচটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ তৈরি করতে ইতিমধ্যেই ৩৫৬টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। শুরু হয় যশোর রোডের গাছ বাঁচাও আন্দোলন। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ সেই আন্দোলনকেই মান্যতা দিল। ইতিহাসের বাইরে গিয়েও এই আন্দোলন যে পরিবেশ রক্ষার লড়াই।