‘বাঙালি’ আর ‘রসগোল্লা’ শব্দদুটি প্রায় সমার্থক অনেকেই কাছে। সত্যিই তো, যে-কোনো উৎসবে বা অনুষ্ঠানে রসগোল্লা ছাড়া আয়োজন ভাবাই যায় না। মিষ্টান্নপ্রিয় বাঙালির স্বাদকোরকগুলিকে বছরের পর বছর ধরে তৃপ্ত করে চলেছে যে মিষ্টি, তার উৎপত্তি কিনা অন্য রাজ্যে! এমন দাবিতে এর আগে গোঁসা করেছিলেন অনেকেই। তবে এবার জিআই আদালতও চূড়ান্ত রায়ে জানিয়ে দিল, রসগোল্লার জন্ম এই বাংলার মাটিতেই, আর কোথাও নয়।
এর আগে, রসগোল্লা নিয়ে জিওগ্রাফিকাল ইন্ডিকেশন ট্যাগ বা জিআই ট্যাগ গিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের পক্ষেই। কিন্তু তাতে সন্তুষ্ট হয়নি ওড়িশা। পশ্চিমবঙ্গ এই শংসা পাওয়ার পর, তারা চেন্নাই-এর জিআই রেজিস্ট্রেশন দফতরে কাগজপত্র জমা দিয়ে দাবি করে – বাংলা নয়, ওড়িশাতেই উৎপত্তি রসগোল্লার। সাময়িকভাবে ওড়িশাও সেই স্বীকৃতির সমান অংশীদার হলেও, শেষ হাসি হাসল বাংলাই। এখন থেকে রসগোল্লার জন্মভূমি হিসেবে উল্লিখিত হবে একমাত্র বাংলার নামই।
এক নাম হলেও, দুই রাজ্যের রসগোল্লার চরিত্রগত ফারাকও কিছু কম নয়। গবেষকরা ইতিহাস, বইপত্র ঘেঁটে প্রমাণ দাখিল করেন, রসগোল্লা বাংলারই সম্পদ। বিখ্যাত ময়রা নবীনচন্দ্র দাসই রসগোল্লা তৈরি করতে শুরু করেন ১৮৬৪ সালে। ১৮৬৮ সালে বর্তমান রসগোল্লা প্রকাশ্যে আসে। সেই নিরিখে ওড়িশার রসগোল্লা অপেক্ষাকৃত নবীন।
সেসব তর্ক এখন দূরে থাক। মোদ্দা কথা, শেষ পাতে হোক বা সম্মানের লড়াইয়ে, রসগোল্লার ওপর শেষ পর্যন্ত অধিকার যে বাঙালিরই, তা আরেকবার প্রমাণ হয়ে গেল।