আমফানে তাণ্ডবে বিপুল পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল রাজ্য। দুই ২৪ পরগনা, মেদিনীপুর, কলকাতা হাওড়া সহ বিস্তির্ণ অঞ্চলে উপড়ে পড়েছিল বহু গাছ। সেই ক্ষতিপূরণের জন্যই একাধিক উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য। সুন্দরবনে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ৫ কোটি ম্যানগ্রোভ উপহার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতা পুরসভা ঘোষণা করেছিল, বৃক্ষরোপণ করলে মিলবে ছাড়। নিউটাউনে বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল রুফটপ গার্ডেন। এবার আরও একটি অভিনব উদ্যোগ নিল রাজ্য। করোনা যোদ্ধাদের মত ‘সবুজ যোদ্ধা’ নিয়োগের পথে হাঁটল রাজ্য।
সুন্দরবন ছাড়া সম্প্রতি সারা রাজ্য মোট সাড়ে তিন কোটি বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ নিয়েছে বনদপ্তর। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সাড়ে আট কোটি গাছ লাগানোর একটি প্রকল্প। সবুজায়ণের এত বড়ো উদ্যোগ রাজ্যের পূর্ববর্তী ইতিহাস খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। আর এই পরিকল্পনায় সাধারণ মানুষকেও অংশ করে নিল রাজ্য সরকার। সবুজ বাঁচানোর এই লড়াইয়ে এগিয়ে আসা নাগরিকদের ‘সবুজ যোদ্ধা’ হিসাবেই চিহ্নিত করতে চলেছে রাজ্য।
তবে শুধু গাছ লাগালেই হবে না। করতে হবে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন। নিজের নাম পরিচয়ের সঙ্গেই জমা দিতে হবে গাছের ছবি। গাছটি কোথায় বসানো হয়েছে এবং তার প্রজাতির সম্পর্কেও তথ্য জমা দিতে হবে অনলাইনে। সমস্ত তথ্যে ভিত্তিতে মিলবে ‘সবুজ যোদ্ধা’-র সার্টিফিকেটও। পাশাপাশিই এই উদ্যোগকে প্রতিযোগিতার পর্যায়ে নিয়ে গেছে আরবান ফরেস্টি রিক্রিয়েশন বিভাগ। জানানো হয়েছে গাছ বাঁচানোর সংখ্যার ওপর বিবেচনা করে, ইডেন গার্ডেনে আয়োজিত আগামী পুষ্পমেলায় সম্মাননাও দেওয়া হবে এগিয়ে থাকা সবুজ-যোদ্ধাদের। বনদপ্তরের তরফে সকল বিধায়ক, জেলা শাসক, পঞ্চায়েত, কাউন্সিলর এবং প্রশাসনিক কর্তাদের অনুরোধ করা হয়েছে এলাকার মানুষকে এই উদ্যোগে উৎসাহিত করতে। পাশাপাশি তাঁদের আবেদনও করা হয়েছে সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য।
প্রকৃতিরক্ষা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ এই দুই বিষয়েই সবুজায়নের বিকল্প নেই। আর তার জন্যই রাজ্য বিগত কয়েক বছর ধরেই বনসৃজনে গুরুত্ব দিয়েছে। এমনকি রাজ্যের বনভূমি আগের তুলনায় বেড়েওছে বেশ খানিকটা। কিন্তু আমফান পরবর্তী সময়ে করোনার সংক্রমণ এবং রেল পরিষেবায় ব্যাঘাত ঠিকাকর্মীদের সমস্যার মুখে ফেলেছে যাতায়াতে। এবার সেই অভাব পূরণ করতে সাধারণ মানুষকে অভিনব এই পরিকল্পনার অংশ করে নিল সরকার।
আরও পড়ুন
এগিয়ে এলেন সুন্দরবনের মহিলারাই, পরিবেশ দিবসে রোপণ করলেন ৫০০০ ম্যানগ্রোভ
Powered by Froala Editor