ধরুন ওষুধের দোকান থেকে বেরোচ্ছেন কোভিড প্রতিষেধক ইনজেকশন নিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে দোকানের কর্মচারী আপনার হাতে ধরিয়ে দিল একটি জয়েন্ট। সত্যি সত্যিই তার মধ্যে ভরা রয়েছে গাঁজা। না না, ভারতে এমন পুরস্কার মিলবে না কোথাও। তবে আমেরিকার ওয়াশিংটন স্টেটে সত্যি সত্যি সরকারি উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই বিশেষ পুরস্কারের ব্যবস্থা। ২১ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যে কোনো ব্যক্তি প্রতিষেধক গ্রহণের পর এই পুরস্কার পাবেন।
একসময় এই আমেরিকাতেই গাঁজার বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল ‘ড্রাগ যুদ্ধ’। আর সেই যুদ্ধের অন্যতম কেন্দ্র ছিল ওয়াশিংটন। অবশেষে ২০১২ সালের যুক্তরাষ্ট্রের আইন সংশোধনীর মাধ্যমে গাঁজার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, চিকিৎসার প্রয়োজনে ব্যবহার করা ছাড়াও ব্যক্তিগত মনোরঞ্জনের জন্যও গাঁজা ব্যবহারে সম্মতি মেলে। কিন্তু তাই বলে সরকার নিজেই গাঁজার মাধ্যমে প্রচার করবে?
এর পিছনে অবশ্য বাস্তব কারণকেই তুলে ধরছেন স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা। পরিসংখ্যান বলছে আমেরিকার মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশের বেশি মানুষ কোভিড প্রতিষেধকের অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। সেখানে ওয়াশিংটন স্টেটে সংখ্যাটা মাত্র ৫৪ শতাংশ। বিগত কয়েক সপ্তাহে ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়া আরও মন্থর হয়েছে। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগামী ৪ জুলাই আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের আগে ৭০ শতাংশ ভ্যাকসিনেশনের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছেন।
সোমবার থেকেই ওয়াশিংটন স্টেটের সমস্ত মেডিসিন স্টোরে শুরু হয়ে গিয়েছে এই বিশেষ পরিষেবা। ইতিমধ্যে যুবক যুবতীদের মধ্যে প্রতিষেধক নেওয়ার প্রবণতা অনেকটাই বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন দোকানের মালিকরা। শুধুই ওয়াশিংটন স্টেট নয়, আমেরিকার অন্যান্য প্রদেশেও এমন নানা পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগ। যেমন ক্যালিফোর্নিয়া এবং ওহায়ো স্টেটে বিশেষ লটারির আয়োজন করা হয়েছে। ক্যাশ পুরস্কার থেকে শুরু করে কলেজ স্কলারশিপ, নানাকিছু মিলতে পারে শুধু এক ডোজ ভ্যাকসিন নিলেই। একদিকে আমেরিকার মতো দেশে প্রতিষেধকের যথেষ্ট জোগান থাকার পরেও মানুষ যথেষ্ট আগ্রহী নয়, আবার তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও পাচ্ছেন না প্রতিষেধক। এই বৈষম্য সত্যিই আশঙ্কার বিষয়।
আরও পড়ুন
পূর্বভারতে একের পর এক ভ্যাকসিনের ট্রায়াল, নেপথ্যে বাঙালি গবেষকরা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
দেশজুড়ে ভ্যাকসিন-সংকট, সরকারকেই কাঠগড়ায় তুললেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা