গাড়ি কিনতে আর আপনাকে শোরুমে যেতে হবে না। ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন পছন্দের মডেলটি। তবে এ আর নতুন কথা কী? সবাই জানি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে এখন সমস্ত দ্রব্যই হাতের নাগালে। তবে যদি বলি শোরুমে গিয়ে আর গাড়ি পাবেন না! কিনতে হবে বাড়িতে বসেই। হ্যাঁ, ঠিক এই কথাই জানিয়েছে ভলভো কোম্পানি। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন বিনিময়ের পথে হেঁটেছে অনেক সংস্থাই। আর সেই চিন্তাকেই আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়ে ভাবছে ভলভো। সারা পৃথিবীর সমস্ত ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে সমস্তটাই কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়েছে কানাডার এই সংস্থা।
এখানেই শেষ নয়। নতুন বাণিজ্যিক পরিকল্পনায় সবটাই ঢেলে সাজাতে চলেছে ভলভো। এমনকি যে-সমস্ত গাড়ি বিক্রি করা হবে, তাদেরও পরিবেশবান্ধব করে তোলার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যেই ভলভোর সমস্ত মডেলকে ব্যাটারি নির্ভর করে তোলা হবে। তবে কিছু গাড়ি তেল এবং বিদ্যুৎ দুই মাধ্যমেই চলতে পারে বলে জানিয়েছেন কোম্পানির আধিকারিকরা। ২০৩০ সালের মধ্যে সমস্ত গাড়িই করে তোলা হবে সম্পূর্ণরূপে বিদ্যুৎনির্ভর। আর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, এবার থেকে নিজেদের গাড়ি কেনার আগে ক্রেতারাই তা নিজের মতো করে মডিফাই করে নিতে পারবেন। কিছু মডেল যেমন নির্দিষ্ট স্পেসিফিকেশন মেনে তৈরি থাকবে, তেমনই ক্রেতারা চাইলে কিছু অদলবদলও করতে পারবেন।
ভলভোর আগেই অবশ্য কেন্দ্রীয় বিনিময়ের দিকে ঝুঁকেছে টোয়াটো এবং নিশান। সাধারণভাবে এর পিছনে করোনা পরিস্থিতির প্রভাবই বেশি বলে মনে হয়। তবে একটু খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যাবে, ২০১৮ সাল থেকেই কেন্দ্রীয় বিনিময়ের প্রবণতা বাড়ছে। এমনকি তার আগেও ডিলারদের শুধুমাত্র মধ্যস্থতার ভূমিকায় রাখা হত। গাড়ি বিক্রি থেকে মেরামতি সবই হত মূলত কেন্দ্রীয়ভাবে। আর তার পিছনে টেসলা কোম্পানির ভূমিকাকেই প্রধান মনে করছেন অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা। ২০০৩ সালে সামান্য পুঁজি নিয়ে পথচলা শুরু করে টেসলা মোটর কোম্পানি। পুঁজি কম থাকায় বেশি ডিলারের সঙ্গে চুক্তি তৈরি সম্ভব ছিল না। কিন্তু এই কেন্দ্রীয় বিনিময়ই ক্রেতাদের আকৃষ্ট করেছিল। আর তার থেকেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হল যে প্রথম সারির গাড়ি কোম্পানিগুলিও নিজেদের বাণিজ্যিক নীতি বদলে ফেলতে বাধ্য হচ্ছে। অর্থনীতিবিদরা এর নতুন নাম রেখেছেন, টেসলা এফেক্ট। অর্থনীতিতে এও এক বিপ্লব বৈকি!
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কাজ করিয়েও টাকা দেননি এডিসন, প্রতিশোধে অল্টারনেটিং কারেন্ট আবিষ্কার টেসলা-র