রবিবার রবির ‘রিং অফ ফায়ার’-এর মহাজাগতিক দৃশ্যে যখন উচ্ছ্বসিত বিশ্ববাসী, সেই দিনই অপরপ্রান্তে সক্রিয় হয়ে উঠল পৃথিবীর আরেক ‘রিং অফ ফায়ার’। প্রশান্ত মহাসাগরকে ঘিরে তার চারিপাশে রয়েছে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির বলয়। যে বলয়ের উপরেই অবস্থান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির। ইন্দোনেশিয়ায় রবিবার জেগে উঠল তেমনই এক জ্বলন্ত দৈত্য।
ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী ইয়োগাকার্টা। তার কাছেই অবস্থান মাউন্ট মেরাপির। ইন্দোনেশিয়ার সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির মধ্যে অন্যতম একটি। অনবরত তার মুখ থেকে গড়িয়ে চলেছে ধীর গতির লাভা। তবে বহুদিন শান্ত থাকার পর, আবার ভয়ঙ্কর চেহারা নিল সে। রবিবার সকালেই হঠাৎ শুরু হয় প্রবল উদ্গীরণ। দুটি পরপর ভয়াবহ বিস্ফোরণে কাঁপিয়ে তোলে সংলগ্ন সব এলাকাই। এই বীভৎসতার স্থায়িত্ব ছিল সাত মিনিট।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে মেরাপি আগ্নেয়পর্বতের উচ্চতা ২ হাজার ৯৬৮ মিটার। তবে অগ্নুৎগারের পরে পাহাড়ের শিখর থেকেও আরো তিন কিলোমিটার উচ্চতায় উড়তে দেখা যায় কালো ধোঁয়া এবং ছাইয়ের কুণ্ডলী। ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের অঞ্চলেও। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল নিকটবর্তী সলেমন এবং ক্লাটেন এই দুই অঞ্চল থেকেই।
তবে এখনো অবধি কোনো জরুরি সতর্কতা জারি করেনি প্রশাসন। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক বিমানগুলিকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে ওই অঞ্চল দিয়ে উড়ানের সময়। আগ্নেয়গিরিকে কেন্দ্র করে ৩ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের অঞ্চলে জারি করা হয়েছে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা।
আরও পড়ুন
গতবছরের আরেক কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার ফুটেজ প্রকাশ্যে আনল মার্কিন পুলিশ, ক্ষোভ আমেরিকায়
তবে এর আগেও বহুবার হিংস্রতা দেখিয়েছে মাউন্ট মেরাপি। নিয়েছে মানুষের প্রাণও। ১৯৩০ সাল থেকে পরিসংখ্যার নিরিখে যার পরিমাণ ১৩০০। শুধুমাত্র ২০১০ সালেই অগ্নুদ্গিরণে মারা গিয়েছিলেন ৩০০ মানুষ। যা এই আগ্নেয়গিরির ইতিহাসে সবথেকে বিধ্বংসী উদাহরণ। এছাড়াও ১৯৯৪ সালে মারা গিয়েছিলেন ৬০ জন।
আরও পড়ুন
জর্জ ফ্লয়েডের অন্তিমযাত্রায় সঙ্গ দিলেন প্রতিবাদীরা, শোকজ্ঞাপন গোটা আমেরিকার
প্রায় ১৭০০টি দ্বীপ নিয়ে তৈরি ইন্দোনেশিয়া। যার মধ্যে রয়েছে সব মিলিয়ে ৫০০টির বেশি আগ্নেয়গিরি। সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে ১৩০টি। ভৌগলিক দিকথেকে ইন্দোনেশিয়ার অবস্থানের প্রশান্ত মহাসাগরের কাছাকাছি হওয়ায় টেকটনিক প্লেটের বিচ্যুতির কারণে প্রায়শই জেগে ওঠে আগ্নেয়গিরিগুলি। গতকাল মাউন্ট মেরাপি জেগে উঠেছিল এমনই।
আরও পড়ুন
আমফান-বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গ, বাঙালি বন্ধুর কাছে সাহায্য পাঠালেন আমেরিকার দুই নার্স
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ – বর্ণবৈষম্য মুছে আমেরিকাকে ‘মানুষ’ করতে চেয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং