কয়েক বছর আগেও গ্রাহক সংখ্যার হিসাবে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে ছিল ভোডাফোন-আইডিয়া লিমিটেড। আর এর মধ্যেই সেই স্থান এসে দাঁড়িয়েছে তৃতীয় স্থানে। একদিকে রিলায়েন্স জিওর সঙ্গে তীব্র মাশুল-যুদ্ধ, আর অন্যদিকে কেন্দ্রীয় টেলিকম দপ্তরের সঙ্গে স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি বকেয়া সংক্রান্ত মামলা, এই সবকিছু নিয়েই বিপর্যস্ত কোম্পানি। এমনকি আদৌ এদেশে আর কোম্পানি ব্যবসা চালাবে কিনা, তাই নিয়েও জল্পনা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এর মধ্যে কোম্পানির আর্থিক রিপোর্ট যেন সেই জল্পনাকেই খানিকটা উস্কে দিল।
কোম্পানির রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বিগত আর্থিক বছরে নিট আর্থিক লোকসানের পরিমাণ ৭৩৮৭৮ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি ইতিপূর্বে কোনো টেলিকম সংস্থার কোনোদিন ঘটেনি। ফলে কোম্পানির কর্তাদের পাশাপাশি চিন্তার ভাঁজ গ্রাহকদের কপালেও। ক্ষতির অর্থ আদায় করতে কোনোভাবে পরিষেবায় ব্যাঘাত ঘটবে না তো? পাশাপাশি ভোডাফোনের ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়েও তো অভিযোগ উঠছে কিছুদিন ধরেই।
ভোডাফোন আইডিয়া লিমিটেড অবশ্য জানিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী স্পেকট্রাম ও লাইসেন্স ফি-র বকেয়া অর্থ সরিয়ে রাখতে গিয়েই ক্ষতি হয়েছে। নাহলে গ্রাহকপ্রতি আয় আগের তুলনায় বেড়েছে। বেড়েছে মোট লাভের পরিমাণও। কিন্তু খরচের তালিকায় যে যুক্ত হয়েছে আলাদা একটি মাত্র। অবশ্য বকেয়ার বিষয়টি এখনও সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। ভোডাফোন আইডিয়া লিমিটেড সেখানে নিজেদের পক্ষে যাবতীয় প্রমাণ দেওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, বকেয়া অর্থ এককালীন ভিত্তিতে শোধ করতে গেলে তাঁদের পক্ষে আর ব্যবসা চালানো সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে টেলিকম ব্যবসার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত কনসালটেন্টদের বক্তব্য অনুযায়ী, জিওর সঙ্গে মাশুলযুদ্ধই ভোডাফোনের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। এক্ষেত্রে সরকার যদি নূন্যতম মাশুল স্থির করে না দেয়, তাহলে অনেক কোম্পানির পক্ষেই ব্যবসা করা সম্ভব হবে না। এই দুশ্চিন্তার মধ্যে বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা। অনেকেই ইতিমধ্যে ভোডাফোন ছেড়ে অন্য কোম্পানির গ্রাহক হতে চলেছেন। আর এমনটা চলতে থাকলে যে কোম্পানির ব্যবসায় ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে, সে-বিষয়ে সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন
১৮৮১ নয়, তার পাঁচ বছর আগেই কলকাতা শুনেছিল প্রথম টেলিফোনের আওয়াজ
Powered by Froala Editor