নৈনিতালের পাহাড়ি উপত্যকায় সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে অন্য অনেক বাঙালির মতোই পৌঁছে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। প্রথমে ছেলে রথীন্দ্রনাথের জন্য একটা বাগান সম্বলিত বাংলো বাড়ি কিনে, কিছুদিন পর নিজেই গিয়েছিলেন সেখানে। আর সেই বাড়িতে বসেই লেখা গীতাঞ্জলির অসংখ্য গান। এছাড়াও কত যে কবিতা লিখেছেন সেখানে, তার সঠিক হিসাব রাখা কঠিন। সম্প্রতি রামগড় পাহাড়ের সেই বাংলো বাড়িতেই তৈরি হতে চলেছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস। কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই খুশি রবীন্দ্র অনুরাগী মানুষরা।
১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের হাতে তৈরি কলেজ হিসাবে পথচলা শুরু বিশ্বভারতীর। ১৯৫১ সালে স্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে আত্মপ্রকাশ। কত না রথী মহারথীর সান্নিধ্যে একটু একটু করে তৈরি হয়েছে ইতিহাস। সেই তালিকায় আছেন যামিনী রায়, প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ থেকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তবে সবার কাছেই গুরুদেবের আসনে অধিষ্ঠিত মানুষটির নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বকবি আর বিশ্বভারতী তাই একে অপরের পরিপূরক।
এই সম্পর্ককেই আরও মজবুত করতে নৈনিতালের রামগড় পাহাড়ে রবীন্দ্রনাথের বাসভবনকে কেন্দ্র করে বিশ্বভারতীর স্যাটেলাইট ক্যাম্পাস তৈরির কথা ঘোষিত হয়েছে। বিশ্বভারতীর শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্রছাত্রীদের মতোই এই ঘোষণায় খুশি কুমায়ুন জেলার মানুষরাও। সেখানে রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি রক্ষার উদ্দেশ্যে আছে একটি ট্রাস্ট বোর্ডও। বোর্ডের সদস্য এবং কুমায়ুন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক অতুল যোশীর কথায়, ক্যাম্পাস তৈরির ক্ষেত্রে আরও জমির প্রয়োজন হলে সেবিষয়েও সরকারের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত তাঁরা। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি বছর দেশবিদেশের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা এসে ভিড় করেন, এদেশের বিদ্যাচর্চার পীঠস্থান যেখানে, সেই বিশ্বভারতীর সঙ্গে এবার জড়িয়ে গেল সম্পূর্ণ পৃথক ভূপ্রকৃতির একটি জায়গার নাম।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ভগ্নপ্রায় দশায় রবীন্দ্রনাথের কাছারিবাড়ির একাংশ, দিনবদলের প্রতীক্ষা শাহাজাদপুরে