মেটাভার্সের দুনিয়ায় এখন প্রতিযোগিতা তুঙ্গে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু সংস্থা ব্যবসায় নেমেও পড়েছে। কিন্তু প্রযুক্তির এই চরম ব্যবহারের বিষয়ে সংশয় এখনও কাটেনি। আর সেইসব সংশয়কেই উস্কে দিচ্ছে সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনা। মার্কিং সংবাদ সংস্থা ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল (Wallstreet Journal) সামনে এনেছে সেইসব তথ্য। দেখা গিয়েছে, মেটাভার্সের (Metaverse) দুনিয়ায় অপরাধ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। আর তার চেয়েও বেশি ঘটছে দুর্ঘটনা। হাত-পা ভাঙার মতো ঘটনা তো ঘটছেই। এমনকি মরণাপন্ন অবস্থাতেও হাসপাতালে ছুটছেন অনেকে।
সম্প্রতি জার্মানির এক ৩১ বছরের যুবক প্রায় মৃত অবস্থাতেই ছুটেছিলেন হাসপাতালে। ঘাড়ের কাছের হাড় ভয়ানকভাবে ভেঙে গিয়েছে, গলায় শ্বাসনালি ছিঁড়ে গিয়েছে, তখন হুঁশ ফিরেছিল তাঁর। ততক্ষণ পর্যন্ত এক ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নির্ভর গেমের মধ্যে নিমগ্ন ছিলেন। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের পক্ষ থেকে আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলের ২০টি মারাত্মক দুর্ঘটনার কথা জানানো হয়েছে। এছাড়া ছোটোখাটো দুর্ঘটনা তো লেগেই রয়েছে।
অনেকের মতে, এই সমস্ত দুর্গটনার জন্য দায়ী বর্তমান সময়ের অনুন্নত প্রযুক্তি। এখনও ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা কাল্পনিক বাস্তবতার জগতে যেতে গেলে চোখ ঢাকা ভারী যন্ত্র মাথায় পরতে হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই যন্ত্রের ওজন এবং আয়তন কমিয়ে আনা হচ্ছে। কিন্তু এই ব্যখ্যা মানতে রাজি নন অনেকেই। কারণ ভার্চুয়াল রিয়েলিটির অর্থই হল সেখানে পৌঁছে গেলে বাস্তব জগতের সমস্ত অনুভূতি হারিয়ে যাবে। প্রযুক্তি উন্নত হতে থাকলে এই বিচ্ছেদ আরও বেশি করে ঘটবে। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী আসলে এই বিচ্ছেদই।
কাল্পনিক জগতকে বাস্তব মনে করে সেই অনুযায়ী হাঁটাচলা, দৌড়ানো বা অন্য সমস্ত কাজ করতে থাকেন এই জগতের সদস্যরা। অথচ তাঁর শরীরটা তো থেকে যায় বাস্তব জগতেই। সেখানে ধাক্কা খেতে হয়। এভাবেই রোজ কারোর না কারোর হাত-পা ভাঙছে। আরও বড়ো দুর্ঘটনা ঘটাও অসম্ভব নয়। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও একটি সমস্যা। ইতিমধ্যে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সদস্য বহু মহিলা অভিযোগ জানিয়েছেন, বিভিন্ন পুরুষ সদস্যের কাছে যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছেন তিনি। অথচ এই জগতে আইন নেই, পুলিশ নেই। মেটাভার্সের দুনিয়ায় মানুষ আদৌ কতটা সুরক্ষিত থাকবে, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে।
আরও পড়ুন
হগওয়ার্টসে বিবাহ, মেটাভার্সের অভিনব ব্যবহার ভারতে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মেটাভার্সে স্বাস্থ্যপরিষেবা, নেপথ্যে ভারতীয় উদ্যোগপতি